রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
নাইজেরিয়ার ক্যাথলিক স্কুল থেকে ৩০৩ শিক্ষার্থীকে অপহরণ এবার ভূমিকম্পে কাঁপলো মিয়ানমার-থাইল্যান্ড-ইন্দোনেশিয়া কোরআন-সুন্নাহ পরিপন্থি কাজ বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না:সালাউদ্দীন দলীয় স্বার্থে ইসলামের ব্যাখ্যা দিলে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে:তারেক রহমান আমীর খসরু বলেন ,বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা চালু করবে মনগড়া মতবাদে গড়া সমাজ শান্তি-সম্মান দিতে পারবে না: জামায়াত আমির এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে খালেদা জিয়া ইসি সচিব নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশকে রেড-ইয়েলো-গ্রিন জোনে ভাগ করা হবে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াত নেতাদের সাক্ষাৎ শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে ফের চিঠি

ভোটের রাজনীতিতে ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে জামায়াতের মহিলা বিভাগ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ভোটকে ঘিরে বড় কৌশল নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তাদের মহিলা বিভাগ প্রকাশ্যে মানববন্ধন, সভা-সেমিনার ও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত এই মহিলা বিভাগ আগামী নির্বাচনে জামায়াতের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠতে পারে।

জামায়াতে ইসলামীর নেতারা জানিয়েছেন, তাদের মহিলা বিভাগ রুকন সম্মেলন, কর্মী সম্মেলন থেকে শুরু করে উঠান বৈঠক, ভোটার সমাবেশসহ নানান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি নির্বাচনকেন্দ্রিক কাজও চলছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নারী ভোটারদের সমর্থন পেতে জামায়াতে ইসলামী নিজের অবস্থান শক্ত করতে উদগ্রীব। কয়েক লক্ষাধিক নারী কর্মীর সমন্বয়ে গঠিত দলটির মহিলা বিভাগ প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য দলের তুলনায় নির্বাচন প্রস্তুতিতে এগিয়ে। একই সঙ্গে সংগঠিত এই মহিলা বিভাগকে ‘ভোটব্যাংক’ হিসেবে দেখছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতারা। আগামী নির্বাচনে নারীদের এই ভোটবাক্স নিয়ে উচ্ছ্বসিত তারা।

জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হামলা, মামলা ও নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্যেও গোপনে তাদের দাওয়াতি কার্যক্রম চালু রেখেছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা প্রকাশ্য কার্যক্রম জোরদার করে। সারাদেশে আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত ১৫ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ২২ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে মহিলা বিভাগের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা।

এরপর ১৯ মে মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি নূরুন্নিসা সিদ্দীকার নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের কার্যক্রম ও কমিউনিটি সম্পৃক্ততা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনার নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় জামায়াতের মহিলা বিভাগের নেত্রীরা তাদের চিন্তা-ভাবনা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

২১ জুলাই জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের পাশে বসে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গেও বৈঠক করেন দলটির মহিলা বিভাগের নেত্রীরা। ঢাকার মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন জামায়াতের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।

জামায়াতের মহিলা বিভাগের লোকবল

জামায়াতে ইসলামী ও তাদের মহিলা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নারী-পুরুষ মিলিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ১০ লাখেরও বেশি কর্মী রয়েছে। যার মধ্যে ৬০ শতাংশ পুরুষ ও ৪০ শতাংশ নারী। মহিলা বিভাগের লোকবল রয়েছে তিনটি পর্যায়ে। সহযোগী সদস্য, কর্মী ও রুকন। রুকন হলো সর্বোচ্চ। অর্ধ লাখ রুকন সদস্য রয়েছেন। কর্মী রয়েছেন প্রায় চার লাখ। এছাড়া সারাদেশে অসংখ্য সহযোগী সদস্য রয়েছে মহিলা বিভাগের।

স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ

বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াতের মহিলা বিভাগের অংশগ্রহণ ছিল। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াতের নারী নেত্রীরা।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ জানিয়েছে, সর্বশেষ ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে মহিলা বিভাগ থেকে ৩৬ জন নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা বিভাগ থেকে ১২ জন নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ছিলেন চারজন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ছিলেন দুজন।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও উত্তরাঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ‘জামায়াতের মহিলা বিভাগে সব পেশার লোকজন রয়েছে। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে গৃহকর্মী পর্যন্ত কর্মী ও রুকন রয়েছেন। অসংখ্য নারী ডাক্তার, শিক্ষিকা রয়েছেন, যারা সক্রিয়ভাবে সংগঠন করছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ভালো প্রভাব রাখবে বলে আশা করছি।’

আব্দুল হালিম আরও বলেন, ‘নারীদের ভোট প্রদানের আগ্রহ বাড়ছে। আমাদের নারী কর্মীরা গ্রামে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, কথা বলছেন। কোনো সভার জন্য ১০০ জন ডাকলে ২০০ জন আসছেন। মহিলা বিভাগের এখন নির্বাচনের কাজটাই বেশি।’জামায়াতের মহিলা বিভাগের নেত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের মূল কাজ নারীদের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া এবং তাদের জীবন ইসলামের আলোকে গড়ে তোলা। এটা একজন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। কিন্তু তাতেই মুসলমান নামধারীরা তাদের বাধা দিয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্টের আগে তাদের কার্যক্রমগুলো অবরুদ্ধ ছিল। কিন্তু শত বাধা সত্ত্বেও তারা থেমে যাননি। চায়ের কাপ হাতে দু-তিনজন মিলে বসে তাদের কাজ করেছেন। পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। এখন ৫ আগস্টের পরে তারা মুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারছেন। দাওয়াতি তৎপরতা বেড়েছে। এখন আরও বেশি সমর্থন পাচ্ছেন। প্রকাশ্যে বড় আকারের সমাবেশ করতে পারছেন।

জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নূরুন্নিসা সিদ্দীকা বলেন, ‘নারীদের ভোট সব দলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা ভোটের প্রয়োজনে নয় বরং নারীদের মধ্যে ইসলামী দাওয়াতের কাজ করা আর তাদের পারিবারিক জীবন সুন্দর করার লক্ষ্যে কাজ করি। সমাজ ও রাষ্ট্র নিয়ে নারীদের সচেতন হতে বলি। নির্বাচনের সময় দলীয় সিদ্ধান্তে বাড়তি কাজ করি। ভোট দেওয়ার বিষয়ে নারীদের ভোটকে আমানত হিসেবে দিতে বলি।’

নারীদের ভোটের বিষয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে নূরুন্নিসা সিদ্দীকা বলেন, আমাদের কর্মী ও রুকন সদস্যরা তো সচেতন হয়েই ভোট দেবে। পরিবারের বাকি সদস্যদেরও প্রভাবিত করবে। কিন্তু দেশে বহু পরিবারে নারীরা স্বামী বা সন্তানের কথায় চলেন, ফলে স্বাধীনভাবে মতামত দিতে পারেন না। এক্ষেত্রে আমরা বলি, প্রত্যেকের উচিত নিজের বিবেক অনুযায়ী ভোট দেওয়া। সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে দেখা গেছে, তরুণ প্রজন্ম পরিবর্তন চায়, আর এই পরিবর্তনের হাওয়া ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর আরও জোরদার হয়েছে। এখন সবাই বিবেক দিয়ে যাচাই করছে কে ভালো কাজ করছে, কে চাঁদাবাজ, আর কে মানুষের উপকারে আসে। আশা করছি নারীরা জাতীয় নির্বাচনে বিবেক দিয়ে ভোট দেবে।’

ভোটকেন্দ্রে নারীদের যাওয়া নিয়েও অনীহা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে এটা নারীদের স্বাভাবিক প্রবণতা। ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে নারীদের যে অনীহা সেটা দূর করার চেষ্টা করছি। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত যদি কেউ না থাকে তাকে তালিকার অন্তর্ভুক্ত হতে বলি। যদিও ভোটকেন্দ্রের নিরাপদ পরিবেশের ওপর নির্ভর করবে নারীদের উপস্থিতি।

নারীবিদ্বেষী মনোভাব ভিত্তিহীন দাবি জামায়াত নেতাদের

মাওলানা আব্দুল হালীম বলেন, জামায়াতের মোট জনশক্তির প্রায় অর্ধেক নারী। আগামী কয়েক বছরে মহিলা বিভাগের রুকন সংখ্যা পুরুষ রুকনের চেয়েও বেশি হবে। এরপরও আমাদের নারীবিদ্বেষ ট্যাগ দেওয়া হয়, আমরা নাকি ইনক্লুসিভ না। আমাদের ছাত্র সংগঠন শিবিরকে এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় ক্যাম্পাসগুলোতে। আমাদের দলে বিভিন্ন ভাবে নারীদের অনুদান রয়েছে। তারা শুধু নারীদের হয়ে কাজ করেও নানাভাবে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

নারী সংসদ সদস্য প্রার্থী দেওয়া নিয়ে আলোচনা

বিগত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন ছাড়া কখনো জামায়াতের মহিলা বিভাগ থেকে প্রার্থী দেয়নি জামায়াত ইসলামী। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের এক সভায় জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াত সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে বৃদ্ধির পক্ষে।

এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একজন সসদ্য  বলেন, ভবিষ্যতে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে সেটা আমাদের নির্বাহী পরিষদের সম্মতিতে হবে। আগামী নির্বাচনে যদি আমাদের ইনক্লুসিভ প্যানেল হয় যেমন- হিন্দু প্রার্থী, নারী, রুকন না এমন কাউকে প্রার্থী করা হতে পারে। আগে আমাদের রুকন হওয়া ছাড়া কেউ প্রার্থী হতে পারতো না, এখন কিন্তু আমরা প্রার্থী দিচ্ছি।

কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের মহিলা বিভাগে কয়েক লাখ সক্রিয় কর্মীর উপস্থিতি দলটির জন্য একটি বড় শক্তি। সংগঠিত নারী ভোটব্যাংক যে কোনো নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এই কর্মীরা মাঠপর্যায়ে প্রচারে সক্রিয় হলে প্রভাব বিস্তার সম্ভব। তবে জামায়াতের রাজনৈতিক বাস্তবতায় শুধু নারী কর্মীর সংখ্যার ওপর নির্ভর করে বড় ধরনের নির্বাচনী সাফল্য অর্জন করা কঠিন হতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, জামায়াতের এত কর্মী ও রুকন থাকা বড় একটা ফ্যাক্টর। তাদের সংখ্যাটাও বিশাল। বিশাল লোকবলের এ সংখ্যাটাকে যদি তারা সঠিকভাবে মোবিলাইজ করতে পারে, তাহলে এটা তাদের ভীষণ সুবিধা দেবে। তারা কৌশলে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও নারীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে জোট করছে। এটা তাদের জন্য ইতিবাচক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম আলী রেজা বলেন, জামায়াতের এই অর্গানাইজড, মহিলা কর্মী বাহিনী নির্বাচনে বড় রকমের প্রভাব বিস্তার করতে পারে। নেক্সট ইলেকশনটা তাদের নিউ এক্সটেন্ট। বিগত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনগুলোতে তাদের যে পারসেন্টেজ অব ভোট, পারসেন্টেজ অব সিট, বিবেচনায় এই মুহূর্তে জামায়াতে ইসলামী দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। যেহেতু সম্প্রতি ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলোতে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ভালো করছে, এটা একটা হাইপ। জাতীয় নির্বাচনে তারা কীভাবে এই ভোট ধরে রাখবে, সেই কৌশল করছে জামায়াতে ইসলামী।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025