রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর মাহফুজ আলম বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডনের সোয়াস-ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন আয়োজিত কর্মসূচি শেষে বের হলে একদল বিক্ষোভকারী বাংলাদেশ হাইকমিশনের গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ করে এবং কিছু সময়ের জন্য গাড়ির পথরোধের চেষ্টা চালায়। তবে মেট্রোপলিটন পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে নিউইয়র্কে সরকারি সফরকালে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একই ধরনের হামলার শিকার হন। একাধিক সূত্র মতে, বাংলাদেশের কনসুলেট জেনারেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিক্ষোভকারীরা ডিম ও বোতল নিক্ষেপ করে এবং কাচের দরজা ভেঙে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রে যুক্তির জায়গায় আক্রমণ কিংবা বিতর্কের জায়গায় সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার পুনর্ব্যক্ত করেছে, মতপ্রকাশ, সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মৌলিক স্বাধীনতা গণতন্ত্রের ভিত্তি, তবে তা অবশ্যই দায়িত্বশীলতা ও পারস্পরিক সম্মানের সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে।
সরকারের বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, কূটনৈতিক গাড়িতে হামলা চালানো এবং তার চলাচল ব্যাহত করার চেষ্টা কেবল বেপরোয়া কাজ নয়, বরং তা জাতিগুলোর মধ্যে সংলাপ রক্ষার আন্তর্জাতিক শিষ্টাচারকেও আঘাত করে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া প্রশংসিত হয়েছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থার জন্য অব্যাহত সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়, আয়োজক প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘সভ্য সংলাপের পক্ষে দৃঢ় থাকুন। কঠিন আলোচনা হোক, মতবিরোধ থাকুক—কিন্তু বক্তা, শ্রোতা ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই তা করতে হবে। কোনো আন্দোলনের শক্তি তার আওয়াজ বা সহিংসতায় নয়, বরং তার শৃঙ্খলা, মর্যাদা ও দায়িত্বশীলতায় নিহিত। ’
এই ঘটনায় সরকার তিন দফা পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে :
১. মেট্রোপলিটন পুলিশকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সম্পন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং ভিডিও ও অন্যান্য প্রমাণ ব্যবহার করে ভাঙচুর, হামলা ও প্রতিবন্ধকতায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছে।
২. প্রবাসী রাজনৈতিক নেতা ও সম্প্রদায় সংগঠকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে তারা যেকোনো সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট নিন্দা জানায়, দলীয় আনুগত্য যাই থাকুক না কেন।
৩. শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার পুনর্ব্যক্ত করছে—কিন্তু একইসঙ্গে কর্মকর্তাসহ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের ভয় ছাড়া বক্তব্য রাখার ও সমাবেশ করার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে জোর দিচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণতন্ত্র আবেগ দাবি করে; একইসঙ্গে আত্মসংযমও দাবি করে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিকাশের পথচলায়, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও মর্যাদা সুরক্ষিত, সেই লক্ষ্যে উভয়ই অপরিহার্য। ’