শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন
ট্রাম্প-মামদানির সম্পর্ক তাহলে কি বদলে গেলো? তারা কি শত্রু থেকে মিত্রে পরিণত হলেন? হোয়াইট হাউজে দুই নেতার সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার পর থেকে এসব প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) প্রথমবার সাক্ষাৎ হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির। এসময় বহুদিনের রাজনৈতিক বৈরিতা পেছনে ফেলে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা করেন তারা। যাকে একসময় ‘সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন’ বলে পরিচয় দিতেন, এখন সেই মামদানির প্রশংসা ও সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নির্বাচনি প্রচারণার সময় জোহরান মামদানিকে ‘শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ’ এবং ‘পুরোপুরি পাগল’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু শুক্রবার ওভাল অফিসে তাকে পাশে দাঁড় করিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মামদানি অনেক রক্ষণশীল মানুষকে অবাক করে দিতে পারেন।’
মামদানিও বলেন, বৈঠকে মতবিরোধের পরিবর্তে নিউইয়র্কবাসীকে সেবা দেওয়ার মতো অভিন্ন লক্ষ্য গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা তাকে সহযোগিতা করবো, যাতে একটি শক্তিশালী ও নিরাপদ নিউইয়র্ক গড়া যায়।’
দুই নেতা বৈঠকে নিউইয়র্কে বাড়িভাড়া সহনীয় করার পথ, জীবনযাত্রার ব্যয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও জ্বালানি খরচসহ বাস্তবমুখী সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। মামদানি যেমন মূল্যস্ফীতির ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, ট্রাম্পও ২০২৪ সালের নির্বাচনে একই ইস্যুতে জনসমর্থন লাভ করেন।
এদিন সাংবাদিকরা মামদানির অতীতে ট্রাম্পকে ‘স্বৈরাচারী’ এবং ‘ফ্যাসিস্ট’ বলার বিষয়ে প্রশ্ন করতে গেলে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাকে এর চেয়েও খারাপ বলা হয়েছে। সমস্যা নেই।’
বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট কখনো কখনো মামদানির হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবও দেন। পরিবেশবান্ধব পরিবহনে না এসে মামদানির প্লেনে ওয়াশিংটন যাত্রা নিয়ে যখন প্রশ্ন ওঠে, ট্রাম্প বলেন, ‘উনি ভালোই করেছেন, আমি তার পক্ষ নিচ্ছি।’
নিউইয়র্ক সিটির অর্থনৈতিক সহায়তা নিয়ে মতবিরোধের সম্ভাবনার বিষয়ে ট্রাম্প জানান, বৈঠকের পর তিনি আর নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল আটকে দেওয়ার হুমকিতে নেই। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি না যে সেটা হবে।’
এক সময় ট্রাম্প প্রকাশ্যে মামদানির নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনকি তিনি যদি অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা না করেন, তবে তাকে গ্রেফতারের হুমকিও দিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার সবকিছুই ছিল স্বস্তিদায়ক আলোচনার পরিবেশে।
মেয়র-নির্বাচিত মামদানির প্রচারণা দলের সাবেক ম্যানেজার ও নবনিযুক্ত চিফ অব স্টাফ এলি বিসগার্ড-চার্চ বলেন, ‘অনেক মতপার্থক্য আছে, কিন্তু অপরাধ কমানো থেকে শুরু করে সবার জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য শহর—এই ইস্যুতে উভয়পক্ষের লক্ষ্য একই।’
রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুওমোকে পরাজিত করে মামদানি ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প এখন বলছেন, ‘জোহরান মামদানি আমাদের রিপাবলিকান পার্টির জন্যও চমক হয়ে উঠবেন।’
আগামী জানুয়ারিতে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন জোহরান মামদানি।
সূত্র: এপি
কেএএ/