রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
শত্রু থেকে মিত্র’ ট্রাম্প-মামদানির সম্পর্ক তাহলে কি বদলে গেলো? আওয়ামী লীগ ও জোটসঙ্গীদের বিচারের দাবিতে এনসিপির গণমিছিল রাজনৈতিক কোনো জোট করবো না, নির্বাচনকেন্দ্রিক সমঝোতা হবে: জামায়াত আমির সন্ধ্যায় ঢাকা ও আশপাশে দুইবার ভূমিকম্প ঢাকায় সকালের পর সন্ধ্যায় ফের ভূমিকম্প নরসিংদীজুড়ে ভূমিকম্পের চিহ্ন, ফেটে ৭-৮ ইঞ্চি ফাঁকা হয়ে গেছে মাটি নিয়ম মেনে বহুতল ভবন নির্মাণ কঠোরভাবে তদারকি করতে হবে: জামায়াত আমির গত ১০ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত: মির্জা ফখরুল আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে: জামায়াত আমির শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাস্তবায়ন হবে ইনশাআল্লাহ : সালাউদ্দিন

‌‌‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে রেমিট্যান্স’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি একেবারে নিচে নেমে গিয়েছিল। আপনাদের রেমিট্যান্সই তা বাঁচিয়েছে। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পেছনে আপনাদের রেমিট্যান্সই মূল চালিকা শক্তি।

শনিবার ম্যানহাটনের নিউইয়র্ক মেরিয়ট মার্কুইসে (১৫৩৫ ব্রডওয়ে) অনুষ্ঠিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ আয়োজনে অংশ নেন।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী।

তরুণদের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত তরুণ জনশক্তি রয়েছে।

বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তর করে এ মানবসম্পদ কাজে লাগাতে এবং বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। 

প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন বাংলাদেশের অংশ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিনিয়োগ ও ধারণা নিয়ে আসুন। ’

তিনি আশ্বাস দেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে।

আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নেপাল, ভুটান ও ভারতের সাত রাজ্য সমুদ্রবন্দরের অভাবে স্থলবেষ্টিত। যদি আমরা তাদের জন্য সমুদ্র উন্মুক্ত করি, সবাই উপকৃত হবে। সুযোগ নিশ্চিত হলে সবাই বাংলাদেশমুখী হবে। ’

২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস জানান, ইতোমধ্যে সামুদ্রিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বহু অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রস্তুত।

পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। তিনি জানান, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। গত এক বছরে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) দ্বিগুণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আশিক চৌধুরী ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রবাসীদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে ‘হারনেসিং ডায়াসপোরা অ্যাজ আ ন্যাশনাল অ্যাসেট’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

আলোচনায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের সম্পদ এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছেন।

আরেকটি প্যানেল সেশন পরিচালনা করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। আলোচনায় বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ নকীবুর রহমান এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ড. তাসনিম জারা বক্তব্য দেন।

তাসনিম জারা তার বক্তৃতায় নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার ওপর জোর দেন, যেখানে সবার অংশগ্রহণ ও মতামত থাকবে। তিনি বলেন, ‘যখন সবাই একসঙ্গে কাজ করে, ইতিহাস বদলায়। আমরা একসঙ্গে ইতিহাস বদলাবো। ’

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনও বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানটি নানা আয়োজনমুখর ছিল। এতে ছিল প্লেনারি সেশন, নতুন ডিজিটাল অ্যাপ উদ্বোধন এবং প্রবাসী সম্পৃক্ততা। এতে প্রবাসীরা তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও উদ্বেগ ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি নীতিনির্ধারক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংলাপের সুযোগ পান। অনুষ্ঠানে ‘শুভেচ্ছা অ্যাপ’ উদ্বোধন করা হয়।

‘এনআরবি কানেক্ট ডে’ ছিল এক বিশেষ সমাবেশ, যেখানে ব্যবসা, একাডেমিয়া, স্বাস্থ্যসেবা, প্রযুক্তি ও সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি একত্রিত হন। এতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনুসন্ধান, নাগরিক সেবা গ্রহণ এবং টেকসই সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা জোরদারের সুযোগ তৈরি হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025