বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
কঙ্গোতে নৌকা ডুবে ৭০ জন নিখোঁজ ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাতের পর শক্তিশালী ভূমিকম্প এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে রাষ্ট্র পরিচালনা করুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে খসরু দেশ এগিয়ে গেলে মা-বোনদের ভয়ে বসবাস করতে হবে না: তারেক রহমান চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে গোপন সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: জামায়াত নেতা শাহজাহান তারেক রহমানের জন্মদিন আজ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, প্রতিক্রিয়ায় যা বললো জামায়াত কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বচওয়ের বাংলাদেশ সফর ১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব গৃহীত

এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে রাষ্ট্র পরিচালনা করুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে খসরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনকালীন যারা দায়িত্বে থাকবেন তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে যাতে কোনো ধরনের সন্দেহ না থাকে, সে জন্যই অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করছি—এখন থেকেই নির্বাচনের দিন পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকারের (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) আদলে রাষ্ট্র পরিচালনা করুন। বড় কোনো সিদ্ধান্তে যাওয়া উচিত হবে না। পুরো মনোযোগ দিন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এবং সেখানে কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকা পালন করুন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আমীর খসরু।

তিনি বলেন, আজকে বোধহয় একটা রায় হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। এটার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি, অনেক প্রাণ দিয়েছি। আমাদের ৬০ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম-খুন হয়েছে। চাকরি-ব্যবসা হারিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে, এগুলো তো আর ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রবর্তন হওয়াতে আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের একটা ফল আমরা পেয়েছি। তবে যেহেতু এটা আগামী নির্বাচন থেকে শুরু হবে, আমি অনুরোধ করবো বর্তমান সরকারকে এটা মাথায় রেখে, বর্তমান সরকারকে কেয়ারটেকার সরকারের আদলে পরিচালিত করতে হবে। যেহেতু ওনারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, কেয়ারটেকার সরকার আগামী নির্বাচন থেকে শুরু হবে, বর্তমান সরকারকে এটা মাথায় রাখতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করার পর দেশের মানুষের মধ্যে যে বিশাল পরিবর্তন, প্রত্যাশা ও আশা-আকাঙ্খা তৈরি হয়েছে, এটাকে যদি আমরা ধারণ করতে না পারি তাহলে কোনো রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যত নেই।

‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি যদি সরকার গঠন করতে পারে, ওই ধারণাগুলো (জিয়াউর রহমান যেভাবে দেশ পরিচালনা করেছিলেন) আবার ফেরত নিয়ে আসবো। সেটার ভিত্তিতে আমরা এখন সব কাজ করতেছি। আগামী দিনের স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাখাত কেমন হবে, কর্মসংস্থানের জন্য কি হবে, পরিবেশের জন্য কি হবে, মহিলা ও শিশুদের জন্য কি হবে…সেই ফাউন্ডেশনের ওপর আমরা আবার আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের কাজ প্রায় সমাপ্তির দিকে।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপির এখন যতগুলো কর্মকাণ্ড চলছে বিভিন্ন জায়গায়, আমরা কিন্তু একটা প্রশ্নোত্তর পালা রাখছি। অর্থাৎ রাজনীতিবিদদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য এটা করা হচ্ছে। এ বিষয়টা আমরা ইচ্ছে করেই করছি। রাজনীতিবিদদের জনগণের প্রশ্নোত্তর ও জবাবদিহি দিতে হবে, এটাই হচ্ছে রাজনীতি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে, আমাদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, বিএনপি কিন্তু প্রতিউত্তরে সেই ভাষায় যাচ্ছে না। আমরা কিন্তু এগুলো গ্রহণ করছি, হজম করছি। তবে আমরা আমাদের ভাষায় কথা বলছি, আমরা রাজনীতির ভাষায় কথা বলছি। আমরা গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলছি। এটা আমাদের ধারণ করতে হবে এবং এটাই হবে আগামী দিনের বাংলাদেশের রাজনীতি।

আমীর খসরু আরও বলেন, আমরা সবাই আগামী নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচনকে বানচাল, বাধাগ্রস্ত ও বিলম্বিত করার জন্য সব ধরনের অপচেষ্টা চলছে। বিএনপি কিন্তু ধৈর্যসহকারে একজন প্রশিক্ষিত বিজ্ঞ নাবিকের মতো চলছে। সমুদ্রে ঝড়, তুফান যা-ই আসুক, একজন বিজ্ঞ নাবিক যেরকমভাবে জাহাজকে চালায়, তারেক রহমানের নেতৃত্ব আমরা কিন্তু সেভাবে নেভিগেট করছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা কিন্তু বড় পিকচার দেখছি। ছোটখাটো বিষয়ে আমরা দেখছি না। আর বড় পিকচারটা হচ্ছে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ হচ্ছে সবচেয়ে বড় পিকচার। সেদিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

আমীর খসরু বলেন, একটি নির্বাচন হওয়ার পরে, নির্বাচিত সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে, তাহলে দেশের এই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব হবে না। বিগত ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার ছিল না এবং গত ১৪-১৫ মাসেও নির্বাচিত সরকার ছিল না। এখানে জনগণের প্রতিনিধিত্ব না থাকার কারণে দেশ আজকে কোথায় যাচ্ছে সেটা বলার প্রয়োজন নেই। আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সবদিকে নিম্নগামী অবস্থা।

তিনি বলেন, যেখানে রাজনৈতিক সমর্থন থাকবে না, সেখানে সেই সরকার জনগণের কথাও বুঝবে না এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধও থাকবে না। এছাড়া জনগণের চাহিদাও মেটাতে পারবে না। এজন্য এই নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমরা সবাই মিলে এই নির্বাচনকে সফলভাবে সমর্থনের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে চাই। একবার যদি দেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসে এবং দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে পারি, দেশে সহনশীলতা ও স্থিতিশীলতা আনতে পারি, তাহলে স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারবো।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025