বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
মেহেরপুর জেলা জামায়াতের উদ্যোগে দাঁড়িপাল্লা মার্কার বিশাল নির্বাচনী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত। ইন্দোনেশিয়ার শক্তিশালী আগ্নেয়গিরি জেগে উঠেছে ,সর্বোচ্চ সতর্কতা ৩০ নভেম্বর থেকে বিভাগীয় সাত শহরে সমাবেশ করবে ৮ দল বিএনপি প্রার্থী সরওয়ার বলেন , গুপ্ত সংগঠনের লোকজন দিয়ে একটি মহল মশাল মিছিল করছে জামায়াত আমীরের সঙ্গে ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াত আমিরের কড়া বার্তা হামজাদের জন্য দুই কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা ভারতকে হারিয়ে ২২ বছরের আক্ষেপ ঘোচালো বাংলাদেশ শততম টেস্টে মুশফিককে সম্মাননা জানালেন ক্রীড়া উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানে অংশীজনদের নিয়ে আসন সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি: নুর

১৭৯ রানের বিশাল জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের দ্বিতীয় বড় জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৭৯ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজও ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নিলো মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়টি ১৮৩ রানের। ২০২৩ সালে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এমন ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। এবার পেলো দ্বিতীয় বড় জয়।

মিরপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৬ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৩০.১ ওভারে ১১৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

মিরপুরের পিচে শুরু থেকেই জাদু দেখিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। বোর্ডে ২৯৬ রানের বড় পুঁজি। বোলিংয়ে দারুণ শুরু করেন নাসুম আহমেদ। তার বাঁহাতি স্পিনে শুরুতেই বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৫ রানে হারায় ৩ উইকেট। সবকটি উইকেটই নাসুমের। এরপর বল ঘুরিয়েছেন রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলামরা।

ক্যারিবীয় ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আঘাত হানেন নাসুম আহমেদ। আলিক আথানেজেকে (১৫) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। নিজের পরের দুই ওভারে আরও দুই উইকেট নাসুমের। আকিম অগাস্টে (০) এলবিডব্লিউ আর ব্রেন্ডন কিং (১৮) হন বোল্ড। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এরপর তানভীর ফেরান ক্যারিবীয় ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ শাই হোপকে। টার্নের বিপক্ষে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন হোপ (৪)।

১৯তম ওভারে জোড়া শিকার করেন রিশাদ হোসেন। শেরফান রাদারফোর্ডকে (১২) শর্ট মিডউইকেটে আর রস্টন চেজকে ঘূর্ণিতে মিডঅনে ক্যাচ বানান এই লেগি। ৬৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এরপর কিয়েসি কার্টিকে (৪৩ বলে ১৫) তানভীর আহমেদ তুলে নিলে শেষ ভরসাও শেষ হয়ে যায় ক্যারিবীয়দের। শেষদিকে আকিল হোসেন ১৫ বলে ২৭ রানের ঝড়ে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমিয়েছেন। ৩০.১ ওখারে ১১৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

নাসুম মাত্র ১১ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট। রিশাদ ৩ উইকেট পান ৫৪ রানের বিনিময়ে। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান মেহেদী মিরাজ ও তানভীর ইসলাম।

এর আগে হাতে ছিল ৮ উইকেট। সেই জায়গা থেকে শেষ ৭৮ বলে আর মোটে ৭৭ রান নিতে পারলো বাংলাদেশ। স্লগ ওভারে সুবিধা করতে না পারায় দুই ওপেনারের দেশের দ্বিতীয় সেরা জুুটির পরও ৮ উইকেটে ২৯৬ রানে থামে বাংলাদেশ।

বলতে গেলে দুই ওপেনারের কষ্ট জলাঞ্জলি দিয়েছেন পরের ব্যাটাররা। ২৫.২ ওভারের ওপেনিং জুুটিতে ১৭৬ রান তুলে ফেলেছিলেন সাইফ হাসান আর সৌম্য সরকার। তখন মনে হচ্ছিল, স্কোর অনায়াসে সাড়ে তিনশ হয়ে যাবে। হয়নি।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। সিরিজে প্রথমবারের মতো দুই ওপেনার খেলেছেন দারুণ আস্থার সঙ্গে। ৯৩ বলে ১০০ আর ১২৮ বলেই ১৫০ রানের জুটি গড়েন তারা।

সৌম্য-সাইফের মারকুটে এই ওপেনিং জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙে ১৭৬ রানে। এটি ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডটি তামিম ইকবাল আর লিটন দাসের। ২০২০ সালে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে এই জুটি গড়েছিলেন তারা।

সৌম্য-সাইফ পেছনে ফেলেছেন শাহরিয়ার হোসেন আর মেহরাব হোসেনের ১৯৯৯ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গড়া ১৭০ রানের জুটির রেকর্ড।

তবে দুজনই ফিরেছেন আক্ষেপ নিয়ে। সাইফ আউট হয়েছেন ৭২ বলে ৮০ করে। মারকুটে ইনিংসে ৬টি করে চার-ছক্কা হাঁকান সাইফ। রস্টন চেজের বলে হাঁকাতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দিয়ে নিজের দোষেই ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

সৌম্য গিয়েছিলেন আরও কাছে। ব্যক্তিগত ৯১ রানে আকিল হোসেনকে বড় শট খেলতে দিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। মাত্র ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন সৌম্য। ৮৬ বলের ইনিংসে ৭টি চার আর ৪টি ছক্কা হাঁকান এই ওপেনার।

দুই ওপেনার ফেরার পর রানের গতি কমে আসে বাংলাদেশের। বিশেষ করে তাওহিদ হৃদয় খেলেছেন খুবই ধীরগতিতে। একটা সময় মারকুটে হতে যান, একটি বাউন্ডারিও হাঁকান। কিন্তু এক বল পরেই স্লগ সুইপে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ। ৪৪ বলে মাত্র ২ বাউন্ডারিতে ২৮ করেন হৃদয়।

শান্তও খুব ভালো খেলেছেন বলা যাবে না। বারকয়েক ক্যাচ-স্টাম্পিং মিস করে ক্যারিবীয়রা। তবে যে বলটি মিস করার কথা, সেটি আর মিস করেনি। অলিক আথানাজের বলে শট খেললে বল আকাশে উঠে যায়। আথানেজে নিজেই অনেকটা দৌড়ে গিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন। ৫৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংসে শান্ত ছক্কা হাঁকান ৩টি।

মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ব্যাট পরিবর্তন করেছিলেন। পরের বলেই তিনি বোল্ড হন আকিল হোসেনের বলে। ১০ বল খেলে করেন মাত্র ৬ রান। রিশাদ হোসেনও প্রমোশন পেয়ে সুবিধা করতে পারেননি। ৬ বলে ৩ করে ফিরতে হয় তাকে। পারেননি নাসুম আহমেদও (১)। ৯ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের বল সমান ১৭ আর নুরুল হাসান সোহানের ৮ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ১৬ রানে ভর করে তিনশোর কাছাকাছি গেছে বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন ৪১ রান দিয়ে শিকার করেছেন ৪টি উইকেট।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025