শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ভূমিকম্প আঘাত : নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ,আহত ওনিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানে সরকারের প্রতি আহবান ভূমিকম্পে হতাহতদের জন্য তারেক রহমানের শোক ভূমিকম্প থেকে রক্ষায় সরকারের এখনই জরুরি করণীয় ঠিক করা উচিত: জাহিদ হোসেন ভূমিকম্পের ক্ষতিরোধে ৬ উদ্যোগ নেবে জামায়াত: ব্যারিস্টার আরমান সেনাকুঞ্জে বেগম খালেদা জিয়া ‌‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ দক্ষতা-পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে’ এটি বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা: গবেষক আনসারী এমন ভূমিকম্প আগে কখনও অনুভব করিনি : ফারুকী ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার গভীর শোক ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬, আহত শতাধিক

জুলাই সনদ এক সামাজিক চুক্তি, নতুন মোড় পরিবর্তনের সূচনা: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত একটি দলিল নয়; এটি নাগরিক, রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রের মধ্যে এক সামাজিক চুক্তি। এটি বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম, কষ্ট, ত্যাগ ও প্রচেষ্টার ফসল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ঐক্যের প্রথম পদক্ষেপ।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় নেতারা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ দিনটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ও অনন্য মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শে রাষ্ট্র গঠনের প্রয়াস শুরু হয়েছিল, তা গত ৫৩ বছরে বহু বাধা সত্ত্বেও থেমে যায়নি। ”

তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, এবং সর্বোপরি ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের উজ্জ্বল উদাহরণ।

তিনি যোগ করেন, “সেই ধারাবাহিক সাহস, চেষ্টা ও প্রেরণার উত্তরাধিকার হিসেবেই আজ আমরা এই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি। ”

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় এক বছর ধরে আলোচনা-পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে এই সনদে উপনীত হয়েছে।

তাদের আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি সমাজের নানা অংশ, কমিশনের কর্মচারী, গবেষক এবং গণমাধ্যমের অবদানকেও স্মরণ করেন।জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাঁদের ত্যাগের ওপরই এই সনদ গঠিত হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই গণঅভ্যুত্থান রাষ্ট্র সংস্কারের দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নাগরিকদের দৃঢ়তা ও সাহসিকতার স্মারক হলো এই জাতীয় সনদ। ”

তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের এই প্রচেষ্টা এক দিনে সফল হবে না, এবং একটি দলিল একাই এর নিশ্চয়তা দিতে পারে না।

তবে এই দলিল দ্রুত বাস্তবায়িত হবে এবং নাগরিক মতামতের আলোকে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে দিকনির্দেশ দেবে।“আমাদের স্রোত বহু, কিন্তু মোহনা একটাই—একটি স্বাধীন, ন্যায়ের ভিত্তিতে গঠিত, বৈষম্যহীন এক বাংলাদেশ,”—বলেন আলী রীয়াজ।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোনো স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াবো। এই সনদ সেই ঐক্যের প্রথম পদক্ষেপ, এক নতুন মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত। ”

তিনি বলেন, “এই অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের ভূমিকা অপরিহার্য।

আজকের জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের এই অনুষ্ঠান তাই এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের যাত্রার ধারাবাহিকতায় এটি এক নতুন দিকনির্দেশক। ”

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025