রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ১১:২৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা, কোচিং বন্ধসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়ালো ‘একমাত্র জমায়াত-শিবিরই দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠনে চেষ্টা করে’ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে আমন্ত্রণ পাচ্ছে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সবাইকে কাজ করার আহ্বান তারেক রহমানের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের সম্মানে সেনাবাহিনীর ইফতার ঈদের মার্কেট করতে যাওয়ার পথে ট্রাকচাপায় নিহত ছেলে, হাসপাতালে মা ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু সোমবার মনোবল হারাবেন না, অভ্যুত্থানে আহতদের পাশে থাকবে সেনাবাহিনী: সেনাপ্রধান পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশসহ নিহত ৮

হঠাৎ মৃত্যু থেকে বাঁচতে ইসলামের নির্দেশনা

মৃত্যু এক চিরন্তন বাস্তবতা। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবার জন্য অবধারিত সুনিশ্চিত এই মৃত্যু। মৃত্যুর থাবা থেকে কেউই রেহাই পাবে না। এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই আমরা সবাই চাই মৃত্যুটা যেন সুন্দর হয়।

উত্তম প্রস্থান সবার কাম্য। চিরবিদায়ের সূচনাটা যেন প্রশান্তিকর হয়- জীবনজুড়ে একজন মুমিনের এটাই মৌলিক কামনা। কিন্তু সবার মৃত্যু এক রকম হয় না। আমরা আমাদের চারপাশে প্রায়ই হঠাৎ মৃত্যুর চিত্র দেখতে পাই।
নিঃসন্দেহে এটি দুঃখজনক এবং মর্মান্তিক। হঠাৎ মৃত্যু একটি ভয়ানক আজাবের নাম। উবায়দ ইবন খালিদ সালামি (রা.) থেকে বর্ণিত, যিনি নবী করিম (সা.)-এর সাহাবি ছিলেন। তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, হঠাৎ মারা যাওয়া আল্লাহর গজবের পাকড়াওস্বরূপ, যাতে সে তওবার সুযোগ না পায়।
(আবু দাউদ)। 

কিয়ামতের আগে হঠাৎ মৃত্যুর পরিমাণ বেড়ে যাবে। আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেন, “কিয়ামতের একটি আলামত হলো, ‘হঠাৎ মৃত্যু’ প্রকাশ পাওয়া” (তাবারানী)। হঠাৎ মৃত্যু, মন্দমৃত্যুসহ সব ধরনের অপমৃত্যু থেকে বাঁচার উপায় কী? এ বিষয়ে ইসলামে কী নির্দেশনা রয়েছে? এ নিবন্ধে আমরা তা আলোচনা করব।

 

এক. অধিক পরিমাণে হঠাৎ মৃত্যু থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে দুআ করা। রসুল (সা.) সব ধরনের মন্দমৃত্যু থেকে বাঁচতে অধিক পরিমাণে আল্লাহর কাছে দুআ করতেন। হজরত আবুল ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) আল্লাহর দরবারে এভাবে দুআ করতেন- ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই গহ্বরে পতিত হয়ে মৃত্যুবরণ থেকে, আমি আপনার কাছ থেকে আশ্রয় চাই পানিতে ডুবে ও আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ থেকে এবং অতি বার্ধক্য থেকে। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই মৃত্যুকালে শয়তানের প্রভাব থেকে, আমি আশ্রয় চাই আপনার পথে জিহাদ থেকে পলায়নপর অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা থেকে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে মৃত্যুবরণ থেকে’ (সুনানে নাসায়ী, সুনানে আবু দাউদ)। কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়, রসুল (সা.) এভাবে দুআ করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি মন্দমৃত্যু ও হঠাৎমৃত্যু থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই। ’

দুই. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় নবীজি (সা.)-এর শেখানো দুআ পড়ে নেওয়া। বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। রাস্তাঘাটে চলাচল করতে হয়। এমতাবস্থায় নিরাপত্তার বিকল্প নেই। নিম্নোক্ত দুআটি পড়লে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যায়।

আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল (সা.) বলেছেন, “যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। ” অর্থ : আল্লাহর নামে, আল্লাহতায়ালার ওপরই নির্ভর করলাম, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারও নেই। তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহতায়ালাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, তুমি হেফাজত অবলম্বন করেছ (অনিষ্ট থেকে)। তাতে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায় (তিরমিজি)।

তিন. নিয়মিত দান-সদকা করা। দান-সদকা মানুষকে আল্লাহর ক্রোধ ও মন্দমৃত্যু থেকে বাঁচায়। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই দান-সদকা আল্লাহর রাগকে নির্বাপিত করে এবং মন্দমৃত্যু থেকে বাঁচায়’ (জামে তিরমিজি)।

সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন অপমৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। কখন কী হয় বলা মুশকিল। আসুন, আমরা সবাই হঠাৎ মৃত্যু থেকে বাঁচতে ইসলামপ্রদত্ত নির্দেশনাগুলো মেনে চলি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে হঠাৎ মৃত্যু, মন্দমৃত্যুসহ সব ধরনের অপমৃত্যু থেকে হেফাজত করুন।

লেখক : খতিব, আউচপাড়া জামে মসজিদ টঙ্গী, গাজীপুর

 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024