বৃহস্পতিবার, ৩১ Jul ২০২৫, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকারে এলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আর আত্মহত্যা করতে হবে না এবং রাস্তায় নেমে মিছিল করতে হবে না। এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন।
শনিবার (২৪ মে) ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার: দর্শন ও অনুশীলন’ শীর্ষক এই সংলাপ ডিএসই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। আর প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ড. তাজনুভা জাবিন, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
মো. মোবারক হোসাইন বলেন, সুরা আরাফ-এ আল্লাহ বলেছেন, যারা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে তাদেরকে আমি একটা সময় ধ্বংস করে দেই। বিগত ইতিহাস, সারা দুনিয়ার ইতিহাস আমাদের সামনে আসার দরকার নেই, আমরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিককালের ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করি, তাহলে আমরা দেথতে পাব সম্পদ আহরণের পরে কীভাবে সম্পদ তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সম্পদ আহরণকারী ব্যাক্তিরা আজ কোথায় আছে? তাদের সম্পদ তাদের ধ্বংস করেছে। মার্সিডিজ গাড়ি রাস্তায় পড়ে থাকে, ৫-৭ কোটি টাকা দামের গাড়ি রাস্তায় পড়ে থাকে, ওনারশিপ হিসেবে কেউ বলে না যে গাড়িটি আমার।
জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটের ২৫ শতাংশের বেশি অর্থ ড্রেনেজে চলে যাচ্ছে। আমরা যদি অবৈধ সম্পদ আহরণ রোধ করতে পারি, এই ড্রেনেজ যদি রোধ করা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে অতো ভাবতে হবে না।
১৯৯৬ সাল এবং ২০১০ ও ২০১১ সালে যে বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারিয়ে রাস্তায় মিছিল করেছেন, তাাদের আত্মহত্যার নিউজ আমাদের কাছে আসছে। এমন তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই। সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাই যারা আজকে প্রোগ্রামের আয়োজন করেছেন তাদের। পুঁজিবাজার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সুতরাং ইসলাম এটাকে কোনোভাবেই ইগনোর করে না। কোরআনে আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন এবং ব্যবসাকে হালাল করেছেন। সেই ব্যবসা হবে ন্যায়ভিত্তিক, ঝুঁকি থাকবে। বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি থাকবে, যারা ব্যবসায়ী তাদেরও ঝুঁকি থাকবে। এই ঝুঁকি নিয়ে ন্যায়ভিত্তিক সুদবিহীন ব্যবসা চালু করা যায়, তাহলে সমস্যা থাকবে না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি সরকারে আসে, তাহলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। এমন দাবি জানিয়ে জামায়াতের এই নেতা বলেন, পুঁজিবাজারের এই ভাইদের আত্মহত্যা করতে হবে না। তাদেরকে রাস্তায় মিছিল করতে হবে না, এই নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি।
অনুষ্ঠানে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. তাজনুভা জাবিন বলেন, পুঁজিবাজার অর্থনীতির আয়না। দুর্ভাগ্যবশত এই খাত কুক্ষিগত ছিল অল্প কিছু গোষ্ঠীর হাতে। গত ১৫ বছরের লুটপাট বাংলাদেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছে। আমরা নতুন হতে পারি, তবে পুঁজিবাজার নিয়ে আমাদের স্বচ্ছ পরিকল্পনা আছে।