মঙ্গলবার, ০১ Jul ২০২৫, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

দেশের সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের আবহ পার্শ্ববর্তী কোনো রাষ্ট্রে নেই: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল। এ দেশে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের যে আবহ বিরাজ করছে সেই আবহ আমাদের পার্শ্ববর্তী কোনো রাষ্ট্রে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলা মোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক ঢাকা জেলা কর্মশালা-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ, কিছু সমস্যা আছে। মন্দিরে যেমন পাথর ছোড়ে, আবার মাজারেও ভাঙচুর করে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বেশকিছু মন্দিরে যেমন হামলা চালানো হয়েছে, তেমনি ৫০টির বেশি মাজারে ভাঙচুর করা হয়েছে। এরূপ ঘটনা যতটা না সাম্প্রদায়িক তারচেয়ে বেশি পলিটিক্যাল। এই ঘটনাগুলো নিয়ে বহির্বিশ্বেও প্রোপাগান্ডা চালানো হয়।

তিনি আগামীদিনে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যকে আরও মজবুত ও দৃঢ় করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

 

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এ দেশে সবার অধিকার সমান। রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার পাবেন। এ দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে জাতি হিসেবে আমাদের প্রতিটি অর্জনে সব ধর্মের মানুষের অবদান রয়েছে।

 

শিষ্টাচার তৈরিতে ধর্মীয় ও পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, পারিবারিক ঐতিহ্যের সঙ্গে ধর্মের সংযোগ ঘটলে শিষ্টাচার ফুলে ফুলে শতদলে শোভিত হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা একটি নৈতিকতার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। প্রত্যেকে তার ধর্মের মূল শিক্ষা সমাজে ছড়িয়ে দিলে দেশে নৈতিকতার আবহ তৈরি হবে। তিনি মন্দিরভিত্তিক মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।

প্রকল্পের শিক্ষকদের সম্মানি বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ বলেন, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষকদের সম্মানি বৃদ্ধি করা হলে এই প্রকল্পের শিক্ষকদের সম্মানিও বৃদ্ধি করা হবে। এ বিষয়ে কোনো বৈষম্য করা হবে না।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের চত্বরে যে শুচিতা ও স্নিগ্ধতা বিরাজ করে সেটা অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। আদিকাল থেকেই মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডার ছায়ায় শিক্ষা কার্যক্রম চলে আসছে। এখনো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় উপাসনালয় রয়েছে।

 

প্রকল্প পরিচালক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও ট্রাস্টের সচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও। অন্যান্যের মধ্যে প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক নিত্য প্রকাশ বক্তৃতা করেন।

মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (ষষ্ঠ পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়াধীন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। জিওবি’র অর্থায়নে ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২১ হতে ডিসেম্বর ২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়িত হচ্ছ।

দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ঢাকা জেলার শিক্ষা কেন্দ্রেসমূহের শিক্ষক, জেলা প্রশাসন, জেলা ও উপজেলা মনিটরিং কমিটির সদস্য, শিক্ষার্থী অভিভাবক, শিক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি/সম্পাদক, সনাতন ধর্মীয় প্রতিনিধি, হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্টি, সাংবাদিকসহ মোট ১৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। এ চলতি পর্বে এ পর্যন্ত ৬৪ জেলার মধ্যে ৪০টি জেলার কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024