বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
একটি দল হাসিনা মার্কা যেনতেন তামাশার নির্বাচন করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ জনগণ পিআর পদ্ধতি বুঝলেও একটিমাত্র দল দাবি করে তারা পিআর বোঝে না। আসলে তারাও পিআর বোঝে, কিন্তু মেনে নিতে চায় না। কারণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ভোট চুরি করতে পারবে না, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করে জনগণকে শোষণ করতে পারবে না। এজন্যই তারা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে বিক্ষোভ মিছিলের আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই ঘোষণা ও জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং সেই আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিট।
সমাবেশে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, অধিকাংশ জনগণের মতামত মেনে নেওয়ার নামই গণতন্ত্র। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কর্তৃক পরিচালিত জরিপে উঠে এসেছে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। সরকারের নির্বাচনের রোডম্যাপ শুধু একটি দল স্বাগত জানিয়েছে। গণতন্ত্রকামী দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো স্বাগত জানায়নি, জানাতে পারেনি। কারণ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রের সংস্কার, সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এ দেশের জনগণ একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখেনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জাতি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করেছে। এজন্য রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার চেয়েছে।
সংস্কারের নামে মাসের পর মাস রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে নিয়ে পরিশেষে সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না বলে সরকার জাতির সঙ্গে তামাশা করেছে মন্তব্য করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক উপায় আলী রীয়াজ দেখাতে না পারলেও আমরা দেখাতে পারবো। আমাদের সেই দায়িত্ব দিন, আমাদের সঙ্গে বসুন।
যারা সংসদে গিয়ে সংস্কার করবেন বলছেন তাদের এখন সংস্কারে আপত্তি কেন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবে বলা দল কীভাবে নিশ্চিত হয়েছে তারাই এবার ক্ষমতায় বসবে? তাদের এই কথায় জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। এতে বোঝা যায় তারা হাসিনা মার্কা যেনতেন একটি তামাশার নির্বাচন করতে চায়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ঘোষণা দিলেও বাস্তবে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। পরিবেশ থাকলে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের একজন উপদেষ্টা পদে থেকে বলতে পারতেন না, দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জীবন নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবে না! প্রকাশ্যে জনগণকে হুমকি দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার পরও তাকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি?
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিমের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।