শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলবো: তারেক রহমান একাত্তরের পক্ষে-বিপক্ষের রাজনীতি নতুন প্রজন্ম গ্রহণ করতে রাজি নয়: নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন -জুলাই ঘোষণাপত্র আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন অনিশ্চিত করে তুলেছে গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা জাতির জন্য অশনি সংকেত: জামায়াত সেক্রেটারি বিশ্বসভ্যতায় মুসলমানদের অবদান ওমরাহ ও হজযাত্রীদের জন্য সুখবর জামানত বাতিলের ভয়ে পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায় কিছু রাজনৈতিক দল : মেজর হাফিজ এখনো অনেক সচিব নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে : ফারুক বন ও পরিবেশ সুরক্ষায় মন্ত্রণালয়ের এক বছরের উদ্যোগ এআইয়ের অপব্যবহার রোধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে : ইসি

একাত্তরের পক্ষে-বিপক্ষের রাজনীতি নতুন প্রজন্ম গ্রহণ করতে রাজি নয়: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের রাজনীতি এখন ২৪-এর মূল্যবোধের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত। তিনি মনে করেন, যারা আবার ৭১-এর পুরোনো রাজনৈতিক কাঠামোয় ফিরতে চায়, তারা বর্তমানের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম লেখেন, ২৪-এর গণজাগরণ অনেক রাজনৈতিক শক্তির জন্য ছিল এক প্রকার আত্মশুদ্ধির সুযোগ। কিন্তু তারা বা আমরা যদি আবার পুরোনো আদর্শিক রাজনীতিতে ফিরে যাই, তবে সেই আত্মশুদ্ধির অর্থও হারিয়ে যাবে। পুরোনো দ্বৈততার রাজনীতির পুনরুত্থান ঠেকানো আমাদের দায়িত্ব।

নাহিদ ইসলাম ওই ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, আমরা আগেও বলেছি- ২৪ হলো ৭১-এর ধারাবাহিকতা। ৭১-এর আকাঙ্ক্ষা, সমতা, মর্যাদা ও ন্যায় নতুনভাবে প্রত্যয়িত হয়েছে ২৪-এর বৈষম্যবিরোধী এবং গণতান্ত্রিক গণজাগরণের মাধ্যমে। যেখানে মুজিববাদ ৭১-কে একটি ভারতকেন্দ্রিক ন্যারেটিভে রূপ দিতে চেয়েছিল, যা আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করেছিল। সেখানে ২৪ আবারও পুনরুদ্ধার করেছে প্রকৃত স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এটি ছিল এক ঐক্যবদ্ধ লড়াই- সাম্রাজ্যবাদ, কর্তৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটি গণতান্ত্রিক ও সাম্যভিত্তিক বাংলাদেশের আশায় পরিচালিত।

এনসিপির আহ্বায়কের মতে, ২৪-এর পর একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা ও একটি নতুন প্রজন্ম আবির্ভূত হয়েছে- যারা ২৪-এর আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। আমরা এখন ৭১ পেরিয়ে ২৪-এ এসে পৌঁছেছি। কিন্তু যারা এখন ৭১-এর পক্ষে না বিপক্ষে- এই রাজনীতিকে আবার পুনরুজ্জীবিত করতে চান, তারা দেশকে আবার একটি সেকেলে রাজনৈতিক কাঠামোয় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম ২৪ থেকে একটি নতুন সূচনা, একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার, যা ২৪-এর গণজাগরণ থেকে জন্ম নেওয়া মূল্যবোধ ও আকাঙ্ক্ষার ওপর প্রতিষ্ঠিত।

পোস্টে তিনি আরও লেখেন, রাষ্ট্র ও সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও গণতান্ত্রিক করার লক্ষ্যে মুজিববাদ এবং সব ধরনের কর্তৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করা আমাদের দায়িত্ব। এই প্রজন্ম এরই মধ্যে ৭১-কে অতিক্রম করে এসেছে। কেউ আর সেই রাজনীতিকে গ্রহণ করতে রাজি নয়, যেখানে ৭১-এর পক্ষে না বিপক্ষে এই দ্বৈততা রাজনীতির ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।

‘৭১ ইতিহাসে থাকবে রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসেবে, একটি নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে। যার প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে, কিন্তু তা আর রাজনৈতিক বৈধতার একমাত্র মানদণ্ড হবে না। ৪৭-ও স্মরণে থাকবে একইভাবে ঐতিহাসিক গুরুত্বে, কিন্তু রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে নয়।’

এনসিপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, এর মানে এই নয় যে, আমরা ৭১ বা ৪৭ নিয়ে আলোচনা বা বিতর্ক করবো না। বরং এই নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় এসে আমরা এখন সেই ঐতিহাসিক প্রশ্নগুলোর সমাধান করতে পারবো।

তিনি আরও লেখেন, মনে রাখতে হবে, ২৪ প্রতিশোধের রাজনীতি নয়। যারা এটিকে প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, তারা এর প্রকৃত আত্মাকে ভুলভাবে বুঝেছে। ২৪ হলো জাতীয় ঐক্য ও পুনর্মিলনের ক্ষেত্র। এর চেতনা ভবিষ্যৎ নির্মাণে একটি ভবিষ্যৎ, যা গড়ে উঠবে ঐকমত্য, সহানুভূতি এবং সামষ্টিক দায়িত্ববোধের ওপর ভিত্তি করে, প্রতিশোধের চক্রে নয়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024