শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালানোর সময় দেশে খাদ্যের মজুত ছিল ১৮ লাখ টন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ টনে। প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাংক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, রিজার্ভ বাড়ছে। এসব কারা করছে? আমলাতন্ত্র করেছে। আমলাতন্ত্র ভেঙে পড়লে ছয়টি বন্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হতো না। পুলিশ যদি সক্রিয়ই হয়, তাহলে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামতে হলো কেন- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, এ ধরনের অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়ে প্রেস সচিব জানান, চারটি মামলার বিচার শুরু হয়েছে, ২৭টি তদন্তের পর্যায়ে আছে এবং ১৬টির চার্জশিট হয়েছে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা সফলভাবে চালিয়ে নেওয়ার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা এবং জুলাইয়ের ৩৬ দিনের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালা পরিচালনার জন্য সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে বৈঠকে অভিনন্দন জানায় উপদেষ্টা পরিষদ। বৈঠকে সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর ৩১ জুলাই পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদ ৪১টি বৈঠক করেছে। ৩১৫টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ২৪৭টি (৭৮.৪১ শতাংশ)। বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় আছে ৬৮টি। অধ্যাদেশ প্রণয়ন হয়েছে ৫৬টি, প্রক্রিয়াধীন ১০টি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ বৈঠকে বলেন, স্বাধীনতার পর যে কোনো সরকারের জন্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রেকর্ড এটি। ১১টি সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রতিবেদন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হয়।
প্রেস সচিব জানান, ‘গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’র নাম পরিবর্তনের দাবি ছিল। উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে- এ ইউনিভার্সিটির নতুন নাম হবে ‘ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বাংলাদেশ’। বৈঠকে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি নিয়ে আবারও আলোচনা হয়েছে। জুলাই শহীদদের মধ্যে যে সম্মানী দেওয়া হচ্ছে, তা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে স্বজনদের মধ্যে একটা ডিসপিউট দেখা যাচ্ছে। টাকাটা কে কীভাবে পাবেন- এক সপ্তাহের মধ্যে বিধি করে দেওয়া হবে। গত বছরের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর গতকাল দ্বিতীয়বারের মতো সচিবালয়ে এসে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। এ উপলক্ষে সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ১ নম্বর গেট ছাড়া সব গেট বন্ধ রাখা হয়। এ গেট দিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয় এবং এখানে সোয়াট টিম মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও অবস্থান ছিল বিভিন্ন পয়েন্টে। দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ছিল। নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো হয় গোটা এলাকা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাংবাদিকরাও প্রবেশের অনুমতি পাননি। ১ নম্বর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্য কেউ আশপাশেও যেতে পারেননি। গত বছরের ২০ নভেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথমবার সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে যোগ দেন। তখন তিনি ৬ নম্বর ভবনের ১৩ তলায় মন্ত্রিসভা কক্ষে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এবারের বৈঠকটি নতুন নির্মিত ভবনে হওয়ায় একে নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে হয়ে আসছিল।