বুধবার, ৩০ Jul ২০২৫, ০৪:০২ অপরাহ্ন

সিরিয়ার সংঘর্ষ ও ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ৩০০, যুদ্ধবিরতির চেষ্টা

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে চতুর্থ দিনের মতো চলা সহিংসতা ও ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০০ জন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ রাজধানী দামেস্ক ও সুয়েইদার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা আমাদের দ্রুজ ভাইদের রক্ষা করছি এবং সিরিয়া সরকারের গ্যাংদের নির্মূল করছি। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে বিশ্বাসঘাতক আগ্রাসন বলে অভিহিত করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুয়েইদার সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৬৯ জন দ্রুজ যোদ্ধা, ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক এবং সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ১৬৫ সদস্য নিহত হয়েছে। এছাড়াও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০ জন সরকারি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।

সোমবার থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার দক্ষিণে অস্ত্র বহনকারী সাঁজোয়া যান, গোলাবারুদের গুদাম ও দামেস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছাকাছি সামরিক স্থাপনায় একাধিক হামলা চালায়। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি বিমান হামলার সময় একটি টিভি উপস্থাপক সরাসরি সম্প্রচারের সময় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্স-এ লেখেন, দামেস্কে সতর্কবার্তা শেষ হয়েছে। আমরা সুয়েইদায় আক্রমণকারী বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখব।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে জানান, দক্ষিণাঞ্চলের এই সহিংসতা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, তবে আমরা বিশ্বাস করি রাতের মধ্যেই পরিস্থিতির সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব মিত্রদের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেছে।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, সরকার ও দ্রুজ ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে সুয়েইদা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা মোতায়েন করেছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসাম বিবিসিকে জানান, আমি আমার প্রতিবেশীকে স্নাইপারের গুলিতে হারালাম। আমরা অ্যাম্বুলেন্স ডাকার চেষ্টা করলেও কেউ পৌঁছাতে পারেনি।

সুয়েইদায় পানির অভাব, চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট এবং জাতীয় হাসপাতালে গোলাবর্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখান থেকে বেশ কয়েকটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।উল্লেখ্য, শুক্রবার এক দ্রুজ ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর থেকে সুয়েইদায় দ্রুজ ও বেদুইন গোত্রের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ে।সূত্র: বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024