সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
শিবির বলছে, চূড়ান্ত সুবিচার নিশ্চিত করতে এই রায় কার্যকর জরুরি
সোমবার (১৭ নভেম্বর) শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার মূল মাস্টারমাইন্ড ছিল পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনা। তার নির্দেশে সারাদেশে গণহত্যা চালিয়ে ১৩৩ জন শিশুসহ সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে। আজকের এই রায়ের মাধ্যমে সন্তান, পিতা, স্বামী ও প্রিয়জন হারানো পরিবারগুলোর প্রতি ন্যায়বিচারের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। চূড়ান্ত সুবিচার নিশ্চিত করতে এই রায় কার্যকর করা জরুরি।
তারা বলেন, শুধু জুলাই গণহত্যাই নয়, বাংলাদেশে ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে ২০০৯ সালের পিলখানা গণহত্যা, আল্লামা সাঈদীর রায়-পরবর্তী গণহত্যা, শাপলা গণহত্যা এবং পল্টন ট্র্যাজেডিসহ সব গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি যেসব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা ও তা টিকিয়ে রাখতে সম্মতি উৎপাদন করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
শিবিরের এই দুই শীর্ষ নেতা বলেন, আজ এই রায় সবার জন্য শিক্ষা। অতীতের কোনো স্বৈরাচার জনগণের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে পারেনি; আগামীতেও যারা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে, তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমরা পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এবং বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে ঘোষিত রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
‘আমরা প্রত্যাশা করি, ভারত সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত পলাতক আসামিদের অবিলম্বে প্রত্যার্পণ করে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে অবস্থান নেবে। তা না হলে দুই দেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সেই দায়ভার তাদেরই বহন করতে হবে।’ যোগ করেন তারা।
এর আগে এদিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।