সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৩ অপরাহ্ন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় পড়া শুরু হয়েছে।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনার-১ এ রায় পড়া শুরু হয়।
শেখ হাসিনার মামলার রায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় বড় স্ক্রিনে রায় প্রদর্শন করা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজেও সম্প্রচার করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক আইজিপি মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম মামলাটি করা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
প্রথম দিকে এই মামলায় শেখ হাসিনাই একমাত্র আসামি ছিলেন। চলতি বছরের ১৬ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন অনুযায়ী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি করা হয়।
মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগগুলো হলো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে নির্মূলের নির্দেশ, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর ঘটনা।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের দিন সাবেক আইজিপি মামুন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন।
মামলার যুক্তিতর্ক ১২ অক্টোবর শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবর শেষ হয়। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন খালাসের আবেদন করেন, আর সাবেক আইজিপি মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ তার খালাসের আবেদন করেন।