বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০০ অপরাহ্ন
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন বিষয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই গণভোটে ভোটাররা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫–এর প্রতি সম্মতি বা অসম্মতি জানাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, একই দিনে অনুষ্ঠিতব্য গণভোটের মাধ্যমে নাগরিকরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করবেন। তিনি ভাষণে প্রশ্নটি পাঠ করে শোনান, যা ব্যালটে একটিমাত্র প্রশ্ন হিসেবে উপস্থাপিত হবে।
গণভোটের প্রশ্নটি হবে— “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?”
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ অনুযায়ী, এই প্রশ্নের অন্তর্ভুক্ত চারটি মূল বিষয় হলো—
ক) নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার-সহ জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে হওয়া ৩০টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণভোটে এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে নিজেদের মতামত জানাবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ হলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে, যারা ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করবে।