বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
সংসদে নারী প্রতিনিধি বাড়বে কি না, সিন্ধান্ত হবে গণভোটে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, গেজেট প্রকাশ ১২ দলীয় জোট সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট সময়োপযোগী ও বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত আমীর খসরু জুলাই সনদের বাইরে ড. ইউনূসের কোনো সিদ্ধান্তের দায় নেবে না বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন: সালাহউদ্দিন নির্বাচনের দিনই গণভোটে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়নি: পরওয়ার সন্ধ্যায় স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জামায়াত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে থাকবে ৪ প্রশ্ন: প্রধান উপদেষ্টা সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর: প্রধান উপদেষ্টা

সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন, নতুন সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট—যেখানে উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন বা পিআর পদ্ধতিতে)।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, আমরা সকল বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোটের আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের মতো গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে একইদিনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, গণভোট আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্নও নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ভাষণে তিনি সেই প্রশ্নটি পাঠ করে শোনান—

“আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?”

গণভোটের প্রশ্নে চারটি মূল প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত থাকবে—

ক) নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।

গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার-সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।

ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, গণভোটের দিন নাগরিকরা এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নের উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাবেন।

গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিগণ একইসাথে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হতে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হবার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটিও আজকে অনুমোদিত আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড প্রধান উপদেষ্টার ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025