মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬ অপরাহ্ন
ভারতে হাসপাতালে নারীদের চেকআপের ভিডিও পর্নো সাইটে! ঠিক যেন চোখ কপালে ওঠার মতোই ব্যাপার! সম্প্রতি এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের একটি হাসপাতালে।
জানা যায়, রাজকোটে এক মাতৃত্বকালীন হাসপাতালে নারীদের গাইনোকোলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় ধারণ করা ভিডিও পর্নো সাইট ও টেলিগ্রাম গ্রুপে আপলোড করা হচ্ছিল।
ভারতীয় সংবাদামধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে রাজকোটের ‘পায়েল মেটারনিটি হোম’-এর রোগীদের অন্তর্বাসহীন অবস্থায় ধারণ করা ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন পর্নো ওয়েবসাইটে। এমনকি সেগুলো বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপে বিক্রির জন্যও তোলা হয়। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, তাদের সার্ভার ‘হ্যাক’ করা হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অমিত আখবারি তখন বলেছিলেন, আমি জানি না ভিডিওগুলো কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের সিসিটিভি সার্ভার সম্ভবত হ্যাক হয়েছে। আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাবো।
তবে তদন্তে দেখা যায়, শুধু এই হাসপাতাল নয়, ভারতের বিভিন্ন শহর—দিল্লি, পুনে, মুম্বাই, নাসিক, সুরাট ও আহমেদাবাদ—মিলিয়ে মোট ৮০টি প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি সিস্টেম হ্যাক করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল স্কুল, করপোরেট অফিস, সিনেমা হল, কারখানা ও ব্যক্তিগত বাড়িও।
হ্যাকাররা প্রায় পুরো ২০২৪ সালের ভিডিও ফুটেজ হাতে পায়। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ড্যাশবোর্ডে ডিফল্ট পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা হয়নি। তারা ‘ব্রুট ফোর্স’ নামে পরিচিত একটি কৌশলে বিভিন্ন শব্দ, সংখ্যা ও চিহ্নের সমন্বয়ে লগইন চেষ্টা করে সহজেই প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও দুই-স্তরের নিরাপত্তা যাচাই (টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করেছে। বিশেষ করে এমন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, যেখানে অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য ও গোপনীয়তা সরাসরি ঝুঁকিতে থাকে—যেমন হাসপাতালের রোগীদের ভিডিও ফুটেজ।
তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে কয়েকজন হ্যাকারকে গ্রেফতার করা হলেও ভিডিওগুলো জুন পর্যন্ত টেলিগ্রাম গ্রুপে বিক্রি হচ্ছিল।
এই ঘটনায় রাজকোটের স্বাস্থ্য প্রশাসন নতুন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা নীতিমালা পর্যালোচনা শুরু করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি