বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
ভারত আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় শুরু করছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ভারত ঘোষণা করেছে, ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কাবুলে বন্ধ করে দেওয়া দূতাবাস পুনরায় চালু করা হবে। এই সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন তালেবান সরকারের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক স্বস্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের পর ভারত তার দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। তবে ২০২২ সালে একটি ছোট মিশন চালু করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য, চিকিৎসা সহায়তা ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কির মধ্যে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এটি ২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো কোনো তালেবান নেতার ভারত সফর। মুতাক্কি বর্তমানে ছয় দিনের সফরে ভারতে আছেন, জাতিসংঘের আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে অস্থায়ী ছাড় পাওয়ার পরই তিনি এই সফরে আসেন।
বর্তমানে চীন, রাশিয়া, ইরান, পাকিস্তান ও তুরস্কসহ প্রায় এক ডজন দেশ কাবুলে দূতাবাস চালু রেখেছে, তবে এদের মধ্যে রাশিয়াই একমাত্র দেশ, যারা আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ভারতের সিদ্ধান্তে তাই তালেবান সরকারের জন্য একটি কূটনৈতিক অগ্রগতি দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ভারতের ‘অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’-এর পররাষ্ট্রনীতি বিভাগের প্রধান হর্ষ পান্ত বলেন,
সম্পর্ক স্থাপন মানে স্বীকৃতি নয়। তালেবান শাসনের অনেক দিক নিয়ে ভারত অস্বস্তিতে আছে — বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধিকার, নারীর অধিকার এবং মানবাধিকার ইস্যুতে।
তিনি আরও বলেন, তবুও ভারতের এই কূটনৈতিক বাস্তববাদ সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিচ্ছে। এটি তালেবান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের নতুন পর্যায় শুরু করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত ও তালেবানের এই পুনরায় ঘনিষ্ঠতা এসেছে মূলত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগের কারণে।
তালেবানও এই সফরের মাধ্যমে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে, বিশেষত অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক স্বীকৃতি লাভের আশায়।
সূত্র: রয়টার্স