বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০২:১৭ অপরাহ্ন

গাজায় মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে ৫৫ হাজার শিশু, প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে পারে অনেকে

বিগত দুই বছর ধরৈ ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনের কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ছয় বছরের কম বয়সী প্রায় ৫৫ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। পুষ্টিহীনতার কারণে এদের মধ্যে ১২ হাজারের বেশি শিশুর অবস্থা গুরুতর, যা দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণ হতে পারে।

বুধবার বিখ্যাত আন্তর্জাতিক চিকিৎসা জার্নাল দ্য ল্যানসেট–এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রকাশিত গবেষণাটি পরিচালনায় সহায়তা করেছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)।

এ গবেষণায় যুদ্ধ চলাকালে শিশুদের পুষ্টিহীনতার সঙ্গে ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।এ গবেষণায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত গাজায় ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী দুই লাখ ২০ হাজার শিশুর বাহুর পরিধি মেপে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শিশুদের ৫ শতাংশে অপুষ্টির লক্ষণ পাওয়া যায়। তবে ছয় মাস পর এ হার বেড়ে ৯ শতাংশ হয়।

২০২৪ সালের শেষ দিকে ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েল কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এ হার দ্বিগুণের বেশি হয়। গবেষণা অনুযায়ী, গাজার মোট জনসংখ্যার অনুপাতে ৫৪ হাজার ৬০০ শিশুর জরুরি পুষ্টি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন।

ইউএনআরডব্লিউএর স্বাস্থ্য পরিচালক ও গবেষক ড. আকিহিরো সেইতা জানিয়েছেন, যুদ্ধ থামিয়ে নিরবচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণ, চিকিৎসা ও পুষ্টি সহায়তা না পেলে আরও অনেক শিশুর মৃত্যু হবে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, ২০২৫ সালের মে থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক হাজার ৪০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৮৫৯ জন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’র কেন্দ্রের কাছে নিহত হয়েছেন।

এদের অধিকাংশের মৃত্যু ইসরায়েলি সামরিক হামলায় ঘটেছে।ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় গাজায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইউনিসেফের তথ্য মতে, এ যুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি শিশু, যাদের মধ্যে অন্তত ২১ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025