জানাজায় অংশগ্রহণ : জানাজায় অংশগ্রহণ করা এক মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের হক। একে মহান আল্লাহ ফরজে কিফায়া করেছেন।
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
প্রত্যেক মুসলমানের ওপর মুসলমানের কিছু হক আছে, যেগুলো আদায় করার মাধ্যমে পরস্পর মহব্বত বৃদ্ধি পায়, আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়। তাই নবীজি (সা.) বিভিন্ন সময় সাহাবায়ে কিরামকে এমন কিছু কাজ বা অভ্যাস গড়ে তোলার নির্দেশ দিতেন, যেগুলো তাঁদের দুনিয়া-আখিরাতকে কল্যাণকর করে তুলবে। বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সাতটি কাজের—রোগীর খোঁজখবর নেওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, হাঁচিদাতার জন্য দোয়া করা, দুর্বলকে সাহায্য করা, মাজলুমের সাহায্য করা, সালামের প্রসার করা এবং কসমকারীর কসম পূর্ণ করা। (বুখারি, হাদিস : ৬২৩৫)
হাদিসে উল্লেখিত প্রতিটি অভ্যাসই মুমিনের জন্য কল্যাণকর, এতে একদিকে যেমন অন্য মুসলমানের হক আদায় হয়, অন্যদিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নেক আমলের পাল্লাও ভারী হয়।
একানে হাদিসের আলোকে এই সাত অভ্যাসের ফজিলত তুলে ধরা হলো—
রোগীর খোঁজখবর নেওয়া : রোগীর খোঁজ নেওয়া ও সেবা করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ কাজ। এতে অফুরন্ত সওয়াব পাওয়া যায়, ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়া যায়। আলী (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি তার রুগ্ণ মুসলমান ভাইকে দেখতে গেলে সে না বসা পর্যন্ত জান্নাতের খেজুর আহরণ করতে থাকে। অতঃপর সে বসলে রহমত তাকে ঢেকে ফেলে।
জানাজায় অংশগ্রহণ : জানাজায় অংশগ্রহণ করা এক মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের হক। একে মহান আল্লাহ ফরজে কিফায়া করেছেন।
(বুখারি, হাদিস : ৪৭)
হাঁচির উত্তর দেওয়া : কোনো মুমিন যখন হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে, তখন অন্যদের ওপর তার হাঁচির উত্তর দেওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়।
(তিরমিজি, হাদিস : ২৭৪৭)
দুর্বলকে সাহায্য করা : দুর্বলকে সাহায্য করা মুমিনের কর্তব্য। দুর্বলকে সাহায্য করলে মহান আল্লাহর সাহায্য ও রহমত পাওয়া যায়। নবীজি (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এ উম্মতকে সাহায্য করেন তার দুর্বলদের দ্বারা, তাদের দোয়া, সালাত ও ইখলাসের কারণে।
(নাসায়ি, হাদিস : ৩১৭৮)
মাজলুমকে সাহায্য করা : মহানবী (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমান একজন অন্যজনের ভাই। সে তার ওপর কোনো রকম জুলুম-অত্যাচার করতে পারে না এবং শত্রুর কাছেও তাকে সমর্পণ করতে পারে না বা তাকে অসহায়ভাবে ছেড়ে দিতে পারে না।
(তিরমিজি, হাদিস : ১৪২৬)
সালামের প্রসার করা : হাদিস শরিফে সালামকে পরিপূর্ণ ইসলাম আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, ইসলামে কোন জিনিসটি উত্তম? তিনি বললেন, তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা-অচেনা সকলকে সালাম দেবে। (বুখারি, হাদিস : ১২)
কসম পূরণ করা : আল্লাহর নাম পবিত্র, তার অবহেলা হয় এমন কোনো কাজ কোনোভাবেই করা যাবে না। আল্লাহর নামে কোনো জায়েজ কাজের কসম করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। মুমিনের উচিত কখনো আল্লাহর নামে কোনো জায়েজ কাজের কসম করে ফেললে তা পূরণ করা। বারা ইবনে আজেব (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) আমাদেরকে কসম পূর্ণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।