বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত হলে নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই: নূরুল ইসলাম বুলবুল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ‘কফিন মিছিল’ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেই ছাড়বো : হাসনাত ইসিকে সহযোগিতা করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ’ ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে যে হুঁশিয়ারি দিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ষড়যন্ত্র করবেন না, দ্রুত নির্বাচন দিন : গয়েশ্বর ১০ দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সংকট কাটবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা এস আলম পরিবারের ৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ আমিরাতের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানালেন- ব্রিগেঃ জেনারেল (অবঃ) আযমী

মৃত্যুই জীবনের অনিবার্য সত্য: মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ

ইতর বা ভদ্র প্রাণী অথবা ধার্মিক ও বিধর্মী—কেউই মৃত্যুসীমার বাইরে নেই। কেউ চাইলে মহান আল্লাহর সব হুকুম ও শক্তিকে অস্বীকার করতে পারে, কিন্তু তাকেও মৃত্যুর কূলে জীবনের তরি ভেড়াতেই হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যে মৃত্যু থেকে পালাতে চাও, তোমাদের সেই মৃত্যুর সামনে যেতেই হবে। ’

(সুরা : জুমআ, আয়াত : ৮)

জীবন চলার বাঁকে বা মোড়ে সুখ-দুঃখের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ মানুষ ব্যাধি ও জরাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যায়।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনি দুর্বল অবস্থায় তোমাদের সৃষ্টি করেন; তারপর দুর্বলতার পর শক্তি দেন, আবার শক্তির পর দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য…’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৫৪)। তিনি আরো বলেন, ‘যিনি মৃত্যু ও জীবনকে সৃষ্টি করেছেন, কে সৎকর্ম করে তা পরীক্ষা করার জন্য। ’

(সুরা : মুলক, আয়াত : ২)

উৎপন্ন পণ্যের গায়ে যেমন মেয়াদ লেখা থাকে, তেমনি আমাদের ভাগ্যলিপির অদৃশ্য লিখনে মরণের স্থান ও ক্ষণ লেখা থাকে; অথচ তা জানার উপায় নেই। আল-কোরআনের বিখ্যাত বাণী : ‘কুল্লু নাফসিন জা য়িকাতুল মাউত’—সবাইকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতেই হবে।

সুরা : আলে-ইমরান, আয়াত : ১৮৫)

মরণের জন্য স্থান-কাল, ব্যস্ততা-বাস্তবতা, বয়সের পরিসংখ্যান বা গড় আয়ু তত্ত্ব—সবই মিথ্যা ও অনিত্য। মহান আল্লাহর কঠোর সতর্কবাণী, ‘তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, পরে শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর জমাট রক্ত থেকে, তারপর তোমাদেরকে          শিশুরূপে বের করেন, তারপর হও যৌবনপ্রাপ্ত, তারপর উপনীত হও বার্ধক্যে। তোমাদের কারো বা আগেই মৃত্যু হয়ে যায়। আর এ জন্য যে তোমরা যাতে নির্দিষ্টকাল প্রাপ্ত হও, যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পারো; তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান।

মৃত্যুই জীবনের অনিবার্য সত্য

মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ
আপডেট: ১১:০৯, রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫

মৃত্যুই জীবনের অনিবার্য সত্য

  • google_news
ইতর বা ভদ্র প্রাণী অথবা ধার্মিক ও বিধর্মী—কেউই মৃত্যুসীমার বাইরে নেই। কেউ চাইলে মহান আল্লাহর সব হুকুম ও শক্তিকে অস্বীকার করতে পারে, কিন্তু তাকেও মৃত্যুর কূলে জীবনের তরি ভেড়াতেই হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যে মৃত্যু থেকে পালাতে চাও, তোমাদের সেই মৃত্যুর সামনে যেতেই হবে। ’

(সুরা : জুমআ, আয়াত : ৮)

জীবন চলার বাঁকে বা মোড়ে সুখ-দুঃখের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ মানুষ ব্যাধি ও জরাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যায়।

 

মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনি দুর্বল অবস্থায় তোমাদের সৃষ্টি করেন; তারপর দুর্বলতার পর শক্তি দেন, আবার শক্তির পর দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য…’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৫৪)। তিনি আরো বলেন, ‘যিনি মৃত্যু ও জীবনকে সৃষ্টি করেছেন, কে সৎকর্ম করে তা পরীক্ষা করার জন্য। ’

(সুরা : মুলক, আয়াত : ২)

উৎপন্ন পণ্যের গায়ে যেমন মেয়াদ লেখা থাকে, তেমনি আমাদের ভাগ্যলিপির অদৃশ্য লিখনে মরণের স্থান ও ক্ষণ লেখা থাকে; অথচ তা জানার উপায় নেই। আল-কোরআনের বিখ্যাত বাণী : ‘কুল্লু নাফসিন জা য়িকাতুল মাউত’—সবাইকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতেই হবে।

 

(সুরা : আলে-ইমরান, আয়াত : ১৮৫)

মরণের জন্য স্থান-কাল, ব্যস্ততা-বাস্তবতা, বয়সের পরিসংখ্যান বা গড় আয়ু তত্ত্ব—সবই মিথ্যা ও অনিত্য। মহান আল্লাহর কঠোর সতর্কবাণী, ‘তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, পরে শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর জমাট রক্ত থেকে, তারপর তোমাদেরকে          শিশুরূপে বের করেন, তারপর হও যৌবনপ্রাপ্ত, তারপর উপনীত হও বার্ধক্যে। তোমাদের কারো বা আগেই মৃত্যু হয়ে যায়। আর এ জন্য যে তোমরা যাতে নির্দিষ্টকাল প্রাপ্ত হও, যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পারো; তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান।

’ 

(সুরা : মুমিন, আয়াত: ৬৭-৬৮)

কারো সাধ্য নেই মৃত্যুকে ঠেকিয়ে দেওয়ার। সব দোয়া ও দাওয়াই ব্যর্থ করে মৃত্যু মহাপ্রভুর পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন কারো প্রাণবায়ু কণ্ঠাগত (ওষ্ঠাগত) হয়, আর সে সময় তোমরা তা তাকিয়ে দেখো, অথচ তখন আমি তোমাদের সবার চেয়েও তার কাছে থাকলেও তোমরা তা দেখতে পাও না। ’

(সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৮৩-৮৫)

মহাপ্রভুর মহাশক্তিময় আদেশ মৃত্যু। তিনিই বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুরক্ষিত-সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।

’ 

(সুরা : নিসা, আয়াত : ৭৮)

তাফসির ইবনু কাসিরসহ অন্যান্য প্রামাণ্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, আদি পিতা আদম (আ.) তথা মানুষের রুহ সংযুক্তি শুরু হয় মাথা থেকে এবং ক্রমে তা পায়ের দিকে বিস্তৃত হয়। এ জন্যই মৃত্যুলক্ষণ হিসেবে প্রথমে হাত-পা শীতল ও অচল-অবশ হতে থাকে। ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ হলেও মাথা কিছুটা গরম থাকে, হৃত্স্পন্দন সামান্য থাকে তখনো।

বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে আছে, যেখানে ব্যক্তিকে ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই ব্যক্তি বেঁচে উঠেছেন। সেসব ব্যক্তিকে যখন তাদের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তার জন্য যথেষ্ট শব্দ নেই।

সাধারণ ধারণা, মৃত্যুর আগে নাক ঢলে পড়ে, আটকপাল ভেঙে যায়, শিরার গতি অনিয়মিত অথবা দ্রুত ও দীর্ঘ হয়। তবে এগুলোও আপেক্ষিক। বরং কেউ হাসতে হাসতে অথবা সিজদারত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। আমাদের বিশ্বাস, জীবন একটাই এবং এই জীবনের অবসানে আমরা মহান আল্লাহর দরবারে হিসাবের সম্মুখীন হব।

বর্ণিত আছে, আজরাইল (আ.) ‘জান কবজ’ করার আগেই মানুষের জন্য নিয়োজিত ফেরেশতারা একে একে দায়িত্ব শেষ হওয়ার ঘোষণা দেন। একজন ফেরেশতা বলতে থাকেন, ‘দুনিয়ার বুকে একটি দানাও বাকি নেই, যা সে খেতে পারে। ’ আরেকজন বলেন, ‘একফোঁটা পানিও আর বাকি নেই, যা সে পান করবে। ’ আরেকজন বলেন, ‘একটি শ্বাসও আর বাকি নেই, যা সে গ্রহণ করবে!’ আরেকজন বলেন, ‘দুনিয়ার বুকে এমন একটি জায়গাও নেই, যাতে সে সামান্য সময় অবস্থান করবে…! একজন মানুষের জীবনখাতার সব হিসাব যখন শেষ হয়ে যায়, তখনই তার জন্য খুলে যায় মৃত্যুর দরজা এবং তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে।

‘এই পৃথিবী যেমন আছে তেমনি ঠিক রবে/সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে…’!

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, কাপাসিয়া, গাজীপুর

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024