সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
বিদেশি হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি, বিরোধীদের তোপের মুখে মোদী কঙ্গোতে ভয়াবহ বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু চট্টগ্রামে ছিনতাইকারী চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার শিক্ষা ভবনের সামনে ফুটপাতে পড়ে ছিল বৃদ্ধের মরদেহ জুলাই বিপ্লবের খুনিদের শাস্তি দেখতে চায় জনগণ: জামায়াত আমির আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত: ফখরুল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-ব্যক্তি-সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান রেখে অধ্যাদেশ অনুমোদন যুদ্ধবিরতিকে ঐতিহাসিক বিজয় বললেন শাহবাজ শরিফ গণহত্যাকারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে: উপদেষ্টা আসিফ

চট্টগ্রামে এনসিটি বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার বিরোধী জামায়াত

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি অপারেটরের কাছে ছেড়ে না দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী।

রোববার (২০ এপ্রিল) চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। এই বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি ও রপ্তানির ৯২ শতাংশ কাজ হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর শুধুমাত্র অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র নয়, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সঙ্গেও চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট। তাছাড়া, বাংলাদেশের একমাত্র সামুদ্রিক বন্দর খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) একটি আধুনিক টার্মিনাল হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত হয়ে উঠেছে বলে মনে করে জামায়াত।

এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০১ সালে এনসিটি নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ টার্মিনালে এক হাজার মিটার দীর্ঘ বার্থ রয়েছে, এতে একসঙ্গে পাঁচটি জাহাজ বার্থিং করতে পারে। ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটিজ হিসেবে ২৬ হেক্টর জায়গায় উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত ইয়ার্ড রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কন্টেইনার টার্মিনাল হিসেবে এনসিটি টার্মিনাল বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের মূল আয় আসে এই এনসিটি টার্মিনাল থেকে- এমন মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এনসিটি থেকে আয় হয়েছে এক হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। সর্বোচ্চ আয়ের পাশাপাশি রেকর্ড সংখ্যক কন্টেইনার হ্যাল্ডলিং হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি। চট্টগ্রাম বন্দরের মোট হ্যাল্ডলিংয়ের ৫৫ শতাংশ এনসিটি টার্মিনালে হয়। এনসিটি চালু হওয়ার পর এই টার্মিনালকে আধুনিক টার্মিনালে রূপান্তরিত করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই টার্মিনালে কোনো প্রকার বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই এবং টার্মিনালটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই টার্মিনালের মাধ্যেমে চট্টগ্রাম বন্দর বিশাল রাজস্ব আয় করছে। এ টার্মিনালের ধারণ ক্ষমতা ১১ লাখ টিইইউএস। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব দক্ষতার ফলে এই টার্মিনালে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে।

নগর জামায়াত আমির বলেন, বর্তমানে এনসিটি নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিগত সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের কুনজর পড়ে এই এনসিটি টার্মিনালের ওপর। দেশের অন্যতম অর্থ পাচারকারী ও শেখ পরিবারের প্রধান অর্থ জোগানদাতা সালমান এফ রহমান ব্যাংকসহ দেশের লাভজনক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে সর্বশেষ এনসিটি টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য জোরালো পদক্ষেপ নেন। যে পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করা পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই একই পদ্ধতিতে এনসিটি টার্মিনালও বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার গভীর চক্রান্ত চলছে।

তিনি বলেন, যদি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান না হতো, তাহলে এতদিনে এ টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে চলে যেত। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও সরকারের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন বর্তমান সরকারকে বিভ্রান্তিমূলক বিভিন্ন তথ্য দিয়ে এনসিটি টার্মিনালকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছ

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর সহকারী সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এ কে এম ফজলুল হক, সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ শফিউল আলম, সিনিয়র সাংবাদিক জাহেদুল করিম কচি, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, বন্দর থানা আমির মাহমুদুল আলম, চকবাজার থানার নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানা সেক্রেটারি মোস্তাক আহমদ, বন্দর ইসলামী শ্রমিক সংঘের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইয়াছিন, শ্রমিক নেতা আদনান প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024