মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন
বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি আলোকচিত্র উপহার দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে আমাদের বন্ধুত্বের ভিত্তি গভীরভাবে সংযুক্ত। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে বিমসটেক এর চেয়ারম্যান হিসেবে ভারতের সমর্থন চেয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন ও তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডগুলোর প্রতিটি ঘটনার পেছনে রয়েছে একেকটি পরিবার, যাদের বেদনা আমি অনুভব করি। আমাদের একসাথে কাজ করে এটি বন্ধ করতে হবে। ’
মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা কেবল আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় এবং বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে ভারতীয় ভূখণ্ডে। অধ্যাপক ইউনূস ভারতে আশ্রিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) বিদেশে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্পর্কে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছেন, যা ভারতের অতিথিপরায়ণতার অপব্যবহার।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ তুললে, অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই ধরনের বেশিরভাগ রিপোর্টই অতিরঞ্জিত ও মিথ্যা। আপনি চাইলে আপনার সাংবাদিকদের পাঠান, নিজেরাই যাচাই করে দেখুন। ’
মোদি বলেন, ভারতের সমর্থন কোনো নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তি নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি। তিনি ইউনূসকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে আমরা একটি অগ্রসর, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ দেখতে চাই। ’
বৈঠকের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদদের জানান, বৈঠকে মোদি হিন্দুসহ বাংলাদেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং বাংলাদেশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভারতের চিন্তার বিষয়টি জানান। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্কের আকাঙ্খার কথা জানান। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছে। তবে এই বিষয়ে এ মুহূর্তে এরচেয়ে বেশি বলা তার জন্য ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন এই ভারতীয় কূটনীতিক।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রগতিশীল, শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে এমন কথাবার্তা এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানান।