বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
সরকারের পছন্দের ব্যক্তিদের রাজস্ব ফাঁকি রোধে এনবিআর বিলুপ্ত হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে বিশ্বের সব নিষ্ঠুরতা ছাড়িয়ে গেছেন হাসিনা: প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতির সবখানেই জিয়াউর রহমানের স্পর্শ রয়েছে: রিজভী মাসউদের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির লজ্জিত হওয়া উচিত: সারজিস আলম হান্নান মাসউদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ ঈদের কেনাকাটা নিরাপত্তা শঙ্কায় মধ্যরাতে ক্রেতা কম স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা তামিমের সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে পরিবার ও বিসিবি ইতেকাফের সময় প্রয়োজনীয় বেচাকেনা করা যাবে?

শিক্ষায় এগিয়ে থেকেও চাকরিতে পিছিয়ে নারী

শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর সাফল্য এখন চোখে পড়ার মতো। এসএসসিতে টানা আট ও এইচএসসিতে টানা ১৫ বছর ফলাফলে ছেলেদের পিছনে ফেলছেন তারা। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও এগিয়ে। উচ্চশিক্ষায়ও রয়েছে তাদের চোখ ধাঁধানো সব সাফল্য। তবে সব ধরনের চাকরিক্ষেত্রে এখনো যোজন যোজন পিছিয়ে নারীরা।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিসিএসে প্রতি ১০০ ক্যাডারের ৭৫ জনই পুরুষ। কোটা থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় নারীর সংখ্যা অনেক কম। মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মতো পেশায় পুরুষদের চেয়ে এখনো বেশ পিছিয়ে নারীরা। তবে চিকিৎসাক্ষেত্রে নারী পেশাজীবীরা এখন বেশ এগিয়ে।

শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের মতে—মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় মেয়েরা ভালো করছেন। কিন্তু ভালো ফলাফল নিয়ে স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ করেও অনেকে চাকরির ক্ষেত্রে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন। সংসারজীবন, সামাজিক প্রেক্ষাপটসহ নানান কারণে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তারা ভালো করতে পারছেন না বলে অভিমত অনেকের। তারপরও কেন নারীরা চাকরির বাজার থেকে ছিটকে পড়ছেন, তার কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষায় ছাত্রীদের সাফল্যগাঁথা

মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের হার বেশি। বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে ছাত্রীদের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫২ লাখ ১ হাজার ৮৯০ জন, শতাংশের হিসাবে যা দাঁড়ায় ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ। বাকি ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ ছাত্র।

মেয়েরা এগিয়েছে, এটা ইতিবাচক। সেটা একদিনে কিন্তু হয়নি। অনেক মানুষের, সংগঠনের সমষ্টিগত প্রচেষ্টার ফল এটা। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে যেমন মেয়েদের ভালো অবস্থান। এটা ধরে রাখতে অনেক কাজ করতে হবে।- গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী

মাধ্যমিক স্তরের পাবলিক পরীক্ষা এসএসসিতেও নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার বেশি। সবশেষ টানা আট বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের সবদিক দিয়ে মেয়েরা এগিয়ে ছিল। ২০১৬ সাল থেকে মেয়েরা ধারাবাহিকভাবে ছেলেদের চেয়ে ভালো ফল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সবশেষ ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায়ও ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। তাদের মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ছাত্র। ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন ছাত্রী।

মাধ্যমিকের চেয়ে উচ্চমাধ্যমিক অর্থাৎ, এইচএসসিতে ধারাবাহিক ফলাফলে আরও দাপুটে মেয়েরা। টানা ১৫ বছর তারা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে। ২০০৯ সালে ছেলেরা শেষবারের মতো মেয়েদের চেয়ে ফলাফলে এগিয়ে ছিল। ২০২৪ সালে এইচএসসিতে মেয়েদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং ছেলেদের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ৮০ হাজার ৯৩৩ জন মেয়ে এবং ৬৪ হাজার ৯৭৮ জন ছেলে।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়েরা এগিয়েছে, এটা ইতিবাচক। সেটা একদিনে কিন্তু হয়নি। অনেক মানুষের, সংগঠনের সমষ্টিগত প্রচেষ্টার ফল এটা। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে যেমন মেয়েদের ভালো অবস্থান। এটা ধরে রাখতে অনেক কাজ করতে হবে।’

করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা তো সত্যি যে উপবৃত্তির প্রভাব বড় রয়েছে। সেটা একসময় চালু করা হয়েছিল, এখনো তেমনই রয়েছে। অনেক সময় বন্ধও রাখা হয়। এখন খাতা-কলমের দাম বেড়েছে। খরচ বাড়ছে। উপবৃত্তির পরিমাণও বাড়াতে হবে। প্রযুক্তিতে আসক্ত হয়ে পড়া ঠেকাতে হবে। আরও কিছু কাজ আছে, যা সব সময় করে যেতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়েও ছেলেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার দৌড়ে মেয়েরা

দেশের উচ্চশিক্ষায় নারীরা বেশ জোরেশোরে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক পরীক্ষায়ও ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে থাকছে।

পরিবার ও ক্যারিয়ারে ভারসাম্য রাখাটা মেয়েদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। জেন্ডার বৈষম্য, সঠিক পরামর্শ দেওয়ার লোকের অভাব, বাচ্চার দেখাশোনা ব্যবস্থা না থাকা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব বিজ্ঞান-সংশ্লিষ্ট পেশায় মেয়েদের আসার ক্ষেত্রে বড় বাধা।- ড. সুপ্রিয়া সাহা

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী— দেশের ১৬৩টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের অধীন প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী ৪৭ লাখ ৫৬ হাজার। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ লাখ ৪২ হাজার ও ছাত্রী ২২ লাখ ১৪ হাজার। সেই হিসাবে মোট শিক্ষার্থীর ৪৮ শতাংশ ছাত্রী এবং ৫২ শতাংশ ছাত্র।

ইউজিসির সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুধু সংখ্যাই নয়, ফলাফলের দিক দিয়েও ছাত্রীরা খুব ভালো করছে। আমি মনে করি, এর প্রধান কারণ ছাত্রীদের অন্যদিকে মনোযোগ কম। ছেলেরাও মেধার দিক দিয়ে খারাপ তা নয়, কিন্তু অন্যদিকে ছেলেদের ঝুঁকে পড়ার হার বেশি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়ছে ছাত্রী, বেসরকারিতে কম

ইউজিসির ৪৯তম প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেদন তৈরির সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী ছিলেন ৩৬ হাজার ৬৭৬ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৪১ শতাংশের বেশি। তবে সবশেষ পাঁচ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর হার ছিল ছাত্রদের চেয়েও বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত পাঁচ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ৪৪ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। শুধু ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীর হার প্রায় ৫২ শতাংশ।

তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীরা এখনো বেশ পিছিয়ে। ইউজিসির সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী—বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে ২৯ শতাংশ ছাত্রী। আর ছাত্র ৭১ শতাংশ।

বিজ্ঞানে মেয়েদের আগ্রহ থাকলেও পদে পদে ‘বৈষম্য’

বিজ্ঞান শিক্ষায় দেশের মেয়েরা ব্যাপক আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ অনেক উন্নত দেশের চেয়েও বেশি। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে তারা স্বীকৃতি পাচ্ছেন না।

ইউজিসির ৪৯তম প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ ও রসায়ন বিভাগে গড়ে ৩৩-৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ মেয়ে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে ২৬ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাদের অনেকে নিজ নিজ ব্যাচে ফলাফলে প্রথম থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন।

তুলনামূলকভাবে ছাত্রীরা পড়াশোনার প্রতি ফোকাস বেশি দেয়। তবে মানসিকতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান। ধীরে ধীরে নারীরা চাকরিতেও এগিয়ে যাচ্ছেন, নেতৃত্বে আসছেন। একটু সময় লাগলেও পরিবর্তন হবেই।-ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব

বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট পেশায় চাকরি পাওয়া থেকে শুরু করে পদোন্নতি সব ক্ষেত্রেই মেয়েরা বৈষম্যের শিকার বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুপ্রিয়া সাহা।

তবে এর পেছনে কিছু কারণও রয়েছে উল্লেখ করে ড. সুপ্রিয়া সাহা বলেন, ‘পরিবার ও ক্যারিয়ারে ভারসাম্য রাখাটা মেয়েদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। জেন্ডার বৈষম্য, সঠিক পরামর্শ দেওয়ার লোকের অভাব, বাচ্চার দেখাশোনা ব্যবস্থা না থাকা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব বিজ্ঞান-সংশ্লিষ্ট পেশায় মেয়েদের আসার ক্ষেত্রে বড় বাধা।’

সরকারি চাকরিতে পিছিয়ে নারী

শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণের তুলনায় সরকারি চাকরিতে নারীর হার এখনো যথেষ্ট নয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান-২০২২’এর তথ্যমতে, সেসময় পর্যন্ত দেশে সরকারি চাকরিতে কর্মরত ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৫৮ জন। সরকারি এসব চাকরিজীবীর মধ্যে মাত্র ৪ লাখ ৯ হাজার ১৩৯ জন নারী। বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ জন। শতকরা হিসাবে সরকারি চাকরিতে নারীর উপস্থিতি মাত্র ২৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।

বিসিএসে গড়ে ১০০ ক্যাডারে নারী মাত্র ২৫ জন

২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছয়টি সাধারণ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএস। এতে মোট নিয়োগ পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৮৩ জন, যার মধ্যে নারী ৩ হাজার ১২৯ জন। বাকি ৯ হাজার ৩৫৪ জনই পুরুষ।

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী—ছয়টি সাধারণ বিসিএসে ক্যাডার পদে নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে নারী ২৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। বাকি প্রায় ৭৫ শতাংশই পুরুষ। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ ক্যাডারের ৭৫ জন পুরুষ এবং নারী ২৫ জন।

শিক্ষকতা পেশায়ও পিছিয়ে নারী

শিক্ষকতা ও চিকিৎসা পেশায় নারীদের বেশি দেখা যায়। এ পেশায় অনেক নারী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ফলে শিক্ষকতায় নারীদের অংশগ্রহণ বেশি বলে প্রচলিত রয়েছে। তবে কাগজে-কলমে দেখা গেছে ভিন্নচিত্র। নারীদের চেয়ে শিক্ষকতা পেশায় তিনগুণ বেশি পুরুষ।

ব্যানবেইসের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকতা করছেন ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ জন। তাদের মধ্যে নারী শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র এক লাখ ৮২ হাজার ২৮৮ জন, যা মোট শিক্ষকের ২৮ দশমিক ২২ শতাংশ। আর পুরুষ শিক্ষকের হার ৭১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

পরীক্ষা পদ্ধতির ‘গলদে’ চাকরিতে পিছিয়ে নারীরা

দেশে বিদ্যামান অধিকাংশ চাকরির পরীক্ষায় একাডেমিক পড়াশোনার সঙ্গে মিল নেই। একজন গ্র্যাজুয়েট যে বিষয়েই পড়ুক না কেন, দিনশেষে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞানের একই প্রশ্নে সবাইকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এতে একাডেমিক পরীক্ষায় ভালো করা শিক্ষার্থীরাও চাকরির পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।

গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রধান নির্বাহী রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় আমাদের ছাত্রীরা তো ভালো করছে। মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে তারা একাডেমিক ফলাফলে এগিয়ে থাকছে। তাহলে চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে কেন? এর কারণ হলো—দেশের চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলো একাডেমিক পড়াশোনানির্ভর নয়। অর্থাৎ, একজন শিক্ষার্থী ১৬ বছর ধরে যা পড়ছে, চাকরিতে যোগ দিতে তা মোটেও কাজে লাগছে না। এ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি। তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রের মতো সব চাকরিতেও নারীদের সফল পদচারণা দেখা যাবে।’নারীদের উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ বাড়লেও টিকে থাকতে লড়াই করতে হচ্ছে, যার প্রভাব চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে পড়ছে বলে মনে করেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব। তিনি বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে ছাত্রীরা পড়াশোনার প্রতি ফোকাস বেশি দেয়। তবে মানসিকতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান। ধীরে ধীরে নারীরা চাকরিতেও এগিয়ে যাচ্ছেন, নেতৃত্বে আসছেন। একটু সময় লাগলেও পরিবর্তন হবেই।’

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024