রবিবার, ১৩ Jul ২০২৫, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
দেশ এখনো পুরোপুরি ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি: মৎস্য উপদেষ্টা চাঁদাবাজদের দখলে দেশ, জাতি আতঙ্কিত: খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল হাসিনাকন্যা পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জুলুমমুক্ত দেশ গড়তে হবে : ফয়জুল করিম অপরাধীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা সরকারের কাছেই প্রশ্ন: তারেক রহমান অতি দ্রুত প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন : মির্জা ফখরুল সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের হাতে জামায়াত দেশ ছেড়ে দেবে না: রফিকুল ইসলাম মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইন উপদেষ্টা ৫ আগস্টের পর ভেঙেছে স্বপ্ন, পদত্যাগ করলেন ছাত্রদল নেতা

অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের সমস্যায় ফেলতে পারে ট্রাম্পের নীতি

  1. যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র দৃশ্যত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করেছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপের প্রভাব সেখানে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ওপরও পড়তে পারে।

বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বাসসকে বলেন,‘ অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অভিযান শুরু হয়েছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। সুতরাং বাংলাদেশিরা রেহাই পাবে-এমনটা আমাদের আশা করা ঠিক হবে না।

বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রধান কবির বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিলের পরিকল্পনা করেছে যার ফলে অনেক লোককে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে।

তিনি বলেন, এমন অনেক শিশু আছে যাদের বাবা-মা সফরকালে বা অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালে সেখানে জন্মগ্রহণ করেছিল, অর্থাৎ সে সকল শিশু  জন্ম সূত্রে সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করেছে। কিন্তু প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় তারা এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে যাচ্ছে। তবে নীতিটি আইনি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, যারা যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী লোকদের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারগুলোকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বলবে।

সাবেক কূটনীতিক আরো বলেন, তার জানা মতে ১৬০টি দেশের বহু লোক যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছেন এবং গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারত এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের ১৮ হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে।

আরেকজন বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ট্রাম্প মূলত দক্ষিণ আমেরিকান অভিবাসীদের লক্ষ্য করে একটি কঠোর অভিবাসন নীতি তৈরি করেছেন। কিন্তু যেহেতু নীতিটিতে নির্দিষ্ট কোন দেশের কথা বলা হয়নি, তাই এটির প্রভাব বাংলাদেশীসহ অন্যান্য দেশের অভিবাসীদের ওপড়ও পড়বে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমেরিকান ডেস্কের মহাপরিচালক হিসাবে পূর্বে দায়িত্ব পালনকারী রহমান বলেন, আগের মেয়াদে ট্রাম্প অভিবাসন বিরোধী নীতি গ্রহণ করেছিলেন এবং তার দ্বিতীয় মেয়াদে এটি আরও কঠোর হবে যা তার উদ্বোধনী ভাষণ থেকেই বুঝা গেছে।

রহমান বলেন, তবে নতুন নীতি একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোন ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ করা সহজ করে দিতে পারে।

অনানুষ্ঠানিক বা অসমর্থিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন এবং তাদের এক দশমাংশ অনথিভুক্ত।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইউএস আইসিটি বিশেষজ্ঞ আফজাল হোসেন বলেছেন, ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সুপার পাওয়ার দেশটি অবদান রাখতে সক্ষম সাড়া বিশ্বের শীর্ষ মেধা ও প্রতিভাকে বরাবরই স্বাগত জানিয়ে আসছে।

তার মতে, ট্রাম্পও সেই নীতি থেকে বিচ্যুত হবেন না।
তবে অপ্রয়োজনীয়  বিবেচনায় নতুন প্রশাসন অন্যদের তাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে।রাষ্ট্রদূত কবির এ প্রসঙ্গে হোসেনের সঙ্গে একই অভিমত প্রকাশ করেন যে,  ট্রাম্প ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করা যুবকদের স্বীকৃতি দেবেন।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক টিভি চ্যানেল সিএনএন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত কার্যকরভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যা অনেক উদ্বিগ্ন অভিবাসীকে আরও চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের কারণে বাংলাদেশিসহ হাজার হাজার মানুষকে ভীত হয়ে পড়েছে। মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি তাদের অনেককে ফেরৎ পাঠানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে দৃশ্যত আটক করেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারকালে অভিবাসন ইস্যু ছিল তার শীর্ষ ইস্যুগুলোর মধ্যে একটি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024