শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
নোয়াখালীতে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও ওই আদেশের উপর গণভোট আয়োজনকে কেন্দ্র করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল এর আয়োজন করেছে নোয়াখালী শহর জামায়াতে ইসলামী।
এ সময় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম। বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশ এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরবাজার এসে শেষ হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম মাসুম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণের মাধ্যমে একটি জাতিকে সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। এটা কি জাতির সাথে কোনো ভালো আচরণ করেছেন নাকি জাতির সাথে এটা মশকরা করেছেন। একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট, এটা জাতির সঙ্গে কেমন আচরণ আমরা জানতে চাই।
তিনি বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী দিনে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অঙ্গীকারে এ দেশের জনগণ আবদ্ধ হয়। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এই সনদকে আদর্শ মাধ্যম এবং পরবর্তীতে গণভোটের মাধ্যমে এটাকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। এই দাবিতে আমরা যখন আন্দোলন শুরু করেছিলাম তখন একটি দল বলেছিল ‘এগুলো তো আলোচনার পথে থাকার কথা, জামায়াত এগুলোকে রাজপথে কেন নিয়ে যাচ্ছে।’ গতকাল প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা কি।
জামায়াত নেতা আরও বলেন, আমরা আগেই সন্দেহ করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার আশপাশে এমন কিছু কুচক্রী মহল আছে যারা এই দেশকে অতীতেও সঠিক পথে চলতে দেয়নি আর ভবিষ্যতেও এই দেশকে সঠিক পথে চলতে দেবে না। আমরা এই চক্রান্ত আঁচ করতে পেরে ৫ দফা দাবির ভিত্তিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করি। এই আশঙ্কার জেরে আমাদের সাথে আরও কয়েকটি ইসলামি দল রাজপথের আন্দোলনে শামিল হয়। আমাদের ৫ দফা দাবি ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা ও সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়া, গণভোটের মধ্য দিয়ে এই সনদকে এই জাতির জন্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এটাকে একটি মহাসনদ হিসেবে মর্যাদা দান করা, আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, বিগত স্বৈরশাসকের বিচার নিশ্চিত করা, নতুন কোনো স্বৈরশাসক যাতে তৈরি না হতে পারে সেজন্য নির্বাচন পরিষদকে স্বাধীনসত্ত্বা দান করা। এটা শুধু আমাদের দাবি নই, দেশের ৭০ ভাগ জনগণ এই দাবির পক্ষে।
তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জনগণ জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছে অন্তর্বর্তী সরকার যাতে এটার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। অথচ জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত ভাইদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও তার প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া গতকালের ভাষণ এ জাতিকে হতাশ করেছে। এ সিদ্ধান্ত তিনি কাদের পরামর্শে নিয়েছেন আমরা সেটা জানতে চাই। নির্বাচনের দিন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য ব্যস্ত থাকবে সেদিন গণভোট হবেনা কিংবা গণভোট ত্রুটিপূর্ণ হবে, গণভোটের আসল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে না। জনগণ রাজপথে নামার আগে আপনারা জনগণের চিন্তা ও চাহিদার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।
শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক নাসিমুল গণি মহল-এর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী ৪ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতে আমির ইসহাক খন্দকার।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা একটা কঠিন দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। নির্বাচনের আগে একটা গণভোট দিয়ে এই সরকারকে আগে বৈধ করা হবে। না হলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা করেন।
এছাড়াও সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা সেক্রেটারি ও নোয়াখালী ৩ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা বোরহান উদ্দিন, নোয়াখালী ২ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা সাইয়েদ আহমেদ, নোয়াখালী ৫ আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন, শহর আমির মাওলানা মো. ইউসুফ, নোয়াখালী শহর ছাত্রশিবির সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান প্রমুখ।